যুক্তরাজ্যে ভিসার নিয়মে নতুন পরিবর্তন: স্বাস্থ্যকর্মী ও শিক্ষার্থীদের জন্য শর্ত কঠোর

চলতি বছরের শুরুতে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নতুন অভিবাসন নিয়ম কার্যকর হওয়ার পর বিদেশ থেকে প্রায় ৪ লাখ কম ভিসাপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্যের কর্ম বা শিক্ষা ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। এবার আবারও ভিসার নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে, তবে এই নিয়ম শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী, কর্মী এবং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য।

দেশজুড়ে তীব্র অভিবাসনবিরোধী মনোভাব, অভিবাসনকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ডানপন্থী প্রবণতা এবং অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে বুধবার নতুন নিয়ম ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ‘দ্য গার্ডিয়ান’ এ খবর প্রকাশ করে।

নতুন নিয়মে, নিয়োগ কর্তাদের এখন বিদেশ থেকে কর্মী আনার আগে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিদেশি স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে, বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ করতে ইচ্ছুক নিয়োগ কর্তাদের প্রথমে প্রমাণ করতে হবে যে, তারা ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী এমন কাউকে নিয়োগ করার চেষ্টা করেছেন, যার নতুন ভিসার প্রয়োজন।

এছাড়া, নতুন নিয়মে দক্ষ কর্মী ভিসার জন্য ন্যূনতম বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এপ্রিল থেকে এটি প্রতি বছর ২৩,২০০ ইউরো থেকে বাড়িয়ে ২৫,০০০ ইউরো বা প্রতি ঘণ্টায় ১২.৮২ ইউরো করতে হবে।

ফক্স নিউজ জানিয়েছে, ব্রিটিশ স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী স্টিফেন কিনক বলেছেন, আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যকর্মীরা যুক্তরাজ্যের সামাজিক স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং তাদের অবদান ও কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে।

এদিকে, ব্রিটিশ সরকার শিক্ষার্থী ভিসার নিয়ম কঠোর করেছে, বিশেষ করে স্বল্পমেয়াদী ইংরেজি ভাষা কোর্সের জন্য, যাতে সিস্টেমের অপব্যবহার রোধ করা যায়। যারা ৬ থেকে ১১ মাসের মধ্যে ইংরেজি শিখতে যুক্তরাজ্যে আসছেন, তারা এই পারমিটের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যারা আসলে পড়াশোনা করতে চান না বা কোর্স শেষে যুক্তরাজ্য ত্যাগ করতে চান না, তাদের ক্ষেত্রে উদ্বেগ রয়েছে।

জুলাই ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ সালের মধ্যে সরকার স্বাস্থ্যখাতে ৪৭০টিরও বেশি স্পন্সর লাইসেন্স বাতিল করেছে। অভিবাসন ও নাগরিকত্বমন্ত্রী সীমা মালহোত্রা বলেন, যারা যুক্তরাজ্যে এসে প্রাপ্তবয়স্কদের যত্ন খাতে সহায়তা করছেন, তাদের শোষণ থেকে মুক্ত রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের শুরুতে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নতুন অভিবাসন নিয়ম কার্যকর হওয়ার পর বিদেশ থেকে প্রায় ৪ লাখ কম ভিসাপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্যের কর্ম বা শিক্ষা ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের ৯ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ থেকে কম।