আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক এখনো থামেনি। তার মৃত্যুর প্রায় পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও আদালতে মামলা চলছে ‘সম্ভাব্য ইচ্ছাকৃত অবহেলাজনিত হত্যা’র অভিযোগে। সম্প্রতি সেই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ডিয়েগো ম্যারাডোনার ময়নাতদন্তে অংশ নেওয়া ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মরিসিও কাসিনেল্লি। তার বক্তব্যে উঠে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আদালতে কাসিনেল্লি জানিয়েছেন, হৃদরোগ ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার আগে অন্তত ১০ দিন ধরে ম্যারাডোনার ফুসফুসে পানি জমেছিল। এছাড়া, তার হৃৎপিণ্ডের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল, যা নিশ্চিতভাবে তার মৃত্যুর আগে দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা ভয়াবহ যন্ত্রণা সৃষ্টি করেছিল। তিনি মনে করেন, ম্যারাডোনার চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও নার্সদের এ বিষয়টি আরও আগে বোঝা উচিত ছিল।
১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবল কিংবদন্তি ছিলেন বেপরোয়া জীবনযাপনের প্রতিচ্ছবি। কোকেন ও মদ্যপানের আসক্তি তার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মৃত্যুর মাত্র দুই সপ্তাহ আগে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। জীবনের শেষ দিনগুলো তিনি কাটিয়েছেন বুয়েনস এইরেসের এক অভিজাত ভাড়া বাড়িতে, যেখানে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর সময় তিনি হৃদরোগ ও ‘অ্যাকিউট পালমোনারি এডেমা’য় আক্রান্ত ছিলেন, যা মূলত ফুসফুসে পানি জমার ফলে হয় বলে ব্যাখ্যা করেছেন কাসিনেল্লি।
ম্যারাডোনার মৃত্যুর সময় তার চিকিৎসায় নিয়োজিত ৮ জন সদস্যের মধ্যে ৭ জনের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে। বুয়েনস এইরেসের সান ইসিদরো আদালতে কৌঁসুলিরা দাবি করেছেন, ম্যারাডোনার শেষ দিনগুলো ছিল একপ্রকার ‘হরর থিয়েটার’। যদি অভিযুক্ত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে তাদের ৮ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?