মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত, দেশ-বিদেশে পলাতক এবং ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পাসপোর্ট নবায়ন বা ইস্যু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা ও জাতীয় নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোর কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে আইন মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের সব জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) কাছে এ-সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তালিকা দ্রুত পাঠাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “গত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের পর পতিত সরকারের সংশ্লিষ্ট অনেক ব্যক্তি মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন এবং তারা বর্তমানে দেশ-বিদেশে পলাতক রয়েছেন। সম্প্রতি এসব ব্যক্তিরা পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করছেন, যা প্রচলিত আইন ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।”
গত ৪ মে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কোর কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এরপর ২২ মে এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয় আইন মন্ত্রণালয়ে।
চিঠিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের তালিকা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে এবং ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ও পলাতকদের তালিকা আইন মন্ত্রণালয় থেকে সংগ্রহ করে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোতে পাঠাতে হবে। এসব তালিকার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের পাসপোর্ট নবায়ন রোধ, বাতিল বা নতুন পাসপোর্ট ইস্যু বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, “জেলা প্রশাসকদের কাছেও পলাতক ও আসামিদের তালিকা থাকে। কেউ যাতে এড়িয়ে না যায়, সেজন্য ডিসিদের কাছেও তালিকা চাওয়া হয়েছে।”
এর আগে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে একাধিক অনুসন্ধান সংস্থার আবেদনের ভিত্তিতে আরও অনেকের পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছে।
নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে পলাতক অপরাধীরা বিদেশে আশ্রয় নিয়ে ন্যায়বিচার এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ হারাবেন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তবে রাজনৈতিক মহলে এটি নিয়ে আলোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?