clock ,

নোবেলজয়ী লেখক মারিও বার্গাস ইয়োসা আর নেই

নোবেলজয়ী লেখক মারিও বার্গাস ইয়োসা আর নেই

বিশ্বসাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র, পেরুর নোবেলজয়ী সাহিত্যিক মারিও বার্গাস ইয়োসা আর নেই। ৮৯ বছর বয়সে লিমায় নিজ পরিবারের সান্নিধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। স্থানীয় সময় রোববার তার ছেলে আলভারো বার্গাস ইয়োসা সামাজিক মাধ্যম এক্সে এ তথ্য জানিয়ে একটি পারিবারিক বিবৃতি প্রকাশ করেন। সোমবার সিএনএন তাদের প্রতিবেদনে মৃত্যুসংবাদটি নিশ্চিত করে।

২০১০ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন মারিও বার্গাস ইয়োসা। সুইডিশ অ্যাকাডেমি তার সাহিত্যকর্মের ‘চিত্রময় বর্ণনা ও মানবিক গভীরতা’র প্রশংসা করে। মূলত স্প্যানিশ ভাষায় সাহিত্যচর্চা করতেন তিনি। সৃজনশীল সাহিত্য ছাড়াও তিনি স্বীকৃতি পেয়েছেন তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী রচনার জন্য।

বার্গাস ইয়োসার সাহিত্যিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৫২ সালে নাটক ‘লা গাইড দেল ইনকা’ দিয়ে। তবে পাঠকমহলে ব্যাপক পরিচিতি পান ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘লা সিউদাদ ই লস পেররোস’ (The Time of the Hero) দিয়ে, যা পরে একাধিক ভাষায় অনূদিত হয়।

তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘Conversation in the Cathedral’ (১৯৬৯), ‘The War of the End of the World’ (১৯৮১) এবং ‘Aunt Julia and the Scriptwriter’ (১৯৭৭)। শেষোক্ত উপন্যাসের কাহিনি নিয়ে ১৯৯০ সালে নির্মিত হয় হলিউড ছবি ‘Tune in Tomorrow’

রোববারের বিবৃতিতে বার্গাস ইয়োসার সন্তানরা বলেন, “আমাদের বাবা একজন দীর্ঘ, ঘটনাবহুল ও সার্থক জীবন কাটিয়েছেন। তার অগণিত সাহিত্যকর্ম তাকে অমর করে রাখবে।” তারা আরও জানান, মৃত্যুকালে পরিবারের সদস্যরা তার পাশে ছিলেন।

পেরুর প্রেসিডেন্ট এবং প্রেসিডেন্টের কার্যালয় সামাজিক মাধ্যমে বার্গাস ইয়োসার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

১৯৩৬ সালে পেরুর আরেকিপায় জন্ম নেন ইয়োসা। প্রথম জীবনে বলিভিয়ার কোচাবাম্বায় বসবাস করেন, যেখানে তার দাদা পেরুর কনসাল ছিলেন। পরে সামরিক স্কুলে পড়াশোনা শেষে সান মার্কোস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। জীবনের বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিক, ব্রডকাস্টার ও শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। প্যারিস, লন্ডন, ওয়াশিংটন ও বার্সেলোনায় কাটিয়েছেন দীর্ঘ সময়। ১৯৭৪ সালে ফিরে আসেন লিমায়।

১৯৯০ সালে পেরুর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি, তবে দ্বিতীয় দফায় আলবের্তো ফুজিমোরির কাছে পরাজিত হন। এরপর স্পেনে অভিবাসন নিয়ে ১৯৯৩ সালে স্পেনের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৯৪ সালে জেতেন মর্যাদাপূর্ণ সেরভান্তেস পুরস্কার।

নোবেল জয় পরবর্তী এক সাক্ষাৎকারে ইয়োসা জানান, তার সাহিত্যিক অনুপ্রেরণা ছিলেন ফরাসি লেখক গুস্তাভ ফ্লবার্ত। তার মৃত্যুতে সমগ্র সাহিত্যবিশ্ব হারাল এক প্রজ্ঞাবান ও প্রতিবাদী কলমের অধিকারীকে।

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য