জার্মানিতে বাংলাদেশি ছাত্রের আত্মহত্যা: হতাশা, একাকীত্ব ও অর্থনৈতিক সংকটের করুণ পরিণতি

জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার্থে গিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন মিয়া প্রীতম নামের ২৮ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী। গত ৬ জুন (শুক্রবার) স্থানীয় পুলিশ তার নিথর দেহ উদ্ধার করে। প্রীতম বার্লিনের পাশ্ববর্তী অঙ্গরাজ্য ব্রান্ডেনবুর্গের টেকনিক্যাল হাইস্কুল ভিলডাউ (Technische Hochschule Wildau)-তে ইউরোপীয়ান বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতক (ষষ্ঠ বর্ষ) অধ্যয়নরত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. উলরিকে টিপে এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিন প্রফেসর ক্রিস্টিয়ান মুইলার বলেন, প্রীতম ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও নিবেদিতপ্রাণ ছাত্র। তার অকাল মৃত্যুতে বাংলাদেশে থাকা তার স্ত্রী ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির ১ম তলায় একটি শোকবই খোলা হয়েছে, যাতে সহপাঠীরা তাকে স্মরণ করে লিখতে পারেন। শোকবইটি মাস শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অধ্যয়নরত অন্যান্য বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভাষ্যমতে, জার্মানিতে আসার পর থেকেই প্রীতম গভীর হতাশায় ভুগছিলেন।খণ্ডকালীন চাকরি জোগাড়ে ব্যর্থতা,পারিবারিক ও সাংসারিক চাপ,অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং প্রবাসের নিঃসঙ্গতা—এসব মিলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহপাঠীরা জানান, সহজ-সরল স্বভাবের প্রীতম হতাশা প্রকাশ করতেন না, তবে নিঃশব্দে মানসিক যন্ত্রণা বয়ে বেড়াতেন।

ব্রান্ডেনবুর্গ পুলিশের অপরাধ দমন বিভাগ (Kriminalpolizei) প্রীতমের মৃত্যুর পেছনে কোনো অপরাধ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, তা নিরূপণে অধিকতর তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে।

প্রয়াত প্রীতমের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। তিনি নোয়াখালী জিলা স্কুল এবং নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছেন। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান জার্মানিতে।