ব্রিটিশবিরোধী গান ‘আমি বাংলায় গান গাই’-এর কিংবদন্তি শিল্পী, গীতিকার ও সুরকার প্রতুল মুখোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছেন। বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর ৮৩ বছর বয়সে শনিবার সকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
চলতি বছরের শুরুতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। অস্ত্রোপচারের পর তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন, এরপর তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। শেষবার সোমবার রাতে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে পুনরায় আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়, তবে আর সুস্থ হয়ে ওঠেননি।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জীবন ও সঙ্গীতযাত্রা
প্রতুল মুখোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালের ২৫ জুন, অবিভক্ত বাংলার বরিশালে। দেশভাগের পর পরিবারসহ ওপার বাংলায় চলে যান তিনি, বসবাস শুরু করেন পশ্চিমবঙ্গের চুঁচুড়ায়। ছোটবেলা থেকেই তিনি কবিতা ও গানের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। কবি মঙ্গলচরণ চট্টোপাধ্যায়ের ‘আমি ধান কাটার গান গাই’ কবিতায় সুর দিয়ে তার সঙ্গীতজীবনের সূচনা হয়।
প্রথাগত সঙ্গীত শিক্ষা না থাকলেও প্রতুল মুখোপাধ্যায় গান লিখতেন, সুর করতেন এবং নিজেই গাইতেন। হাসপাতালে শুয়েও চিকিৎসকদের তার বিখ্যাত গান ‘আমি বাংলায় গান গাই’ শুনিয়েছিলেন তিনি।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রথম অ্যালবাম ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে। ১৯৯৪ সালে আসে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘যেতে হবে’ এবং ২০২২ সালে তার শেষ অ্যালবাম ‘ভোর’, যেখানে তার অপ্রকাশিত গান সংকলিত হয়েছে।
প্রতুল মুখোপাধ্যায় বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই গান গাইতে ভালোবাসতেন। তার কণ্ঠে উঠে আসা গানগুলো শ্রোতাদের আবেগ ও চিন্তার জগতে গভীরভাবে নাড়া দিত।
তার প্রয়াণে সঙ্গীতজগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার সৃষ্টি চিরকাল বাংলার মাটিতে বেঁচে থাকবে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?