বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। মার্চের প্রথম ২৬ দিনেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২.৯৪ বিলিয়ন (২৯৪ কোটি ৫০ লাখ) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। গতকাল (২৭ মার্চ) আরও ১০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স আসায়, মাস শেষ হওয়ার আগেই প্রথমবারের মতো ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
এর আগে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে সর্বোচ্চ ২৬৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এবার সেটিকেও ছাড়িয়ে গেছে মার্চের রেকর্ড প্রবাহ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রমজান ও ঈদ উপলক্ষে সাধারণত রেমিট্যান্স বাড়ে। তবে এবারের মতো এত প্রবৃদ্ধি আগে দেখা যায়নি। মার্চ মাসের পুরো সময়জুড়েই রমজানের কারণে প্রবাসীরা বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন। একইসঙ্গে, হুন্ডির তৎপরতা কমে যাওয়ায় বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, "২৫ ও ২৬ মার্চ মাত্র দুই দিনেই ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার এসেছে। ২০২৩ সালের মার্চে প্রথম ২৬ দিনে যেখানে ১৬১ কোটি ৪০ লাখ ডলার এসেছিল, এবার সেখানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮২.৪ শতাংশ।"
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, "দেশ থেকে অর্থ পাচারের পথ সংকুচিত হওয়ায় হুন্ডির চাহিদা কমেছে। ফলে প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে অর্থ পাঠাচ্ছেন।"
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, "হুন্ডির অবৈধ চাহিদা কমায় বৈধ রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। তবে এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে অর্থপাচার বন্ধে আরও কঠোর হতে হবে এবং প্রবাসীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।"
২০২৪-২৫ অর্থবছরে (১ জুলাই থেকে ২৬ মার্চ) মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২১.৪৪ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৭৫ বিলিয়ন ডলার বেশি। তবে অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেছেন, "রেমিট্যান্সের বড় অংশই প্রবাসী পরিবারের খরচে ব্যয় হচ্ছে, বিনিয়োগে আসছে না। বিনিয়োগের ভালো ক্ষেত্র তৈরি করা গেলে রেমিট্যান্স অর্থনীতিতে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারত।"
বর্তমান ধারা বজায় থাকলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স ২৮ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড স্পর্শ করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?