clock ,

একগুচ্ছ রক্ত ঝরা মার্চের কবিতা

একগুচ্ছ রক্ত ঝরা মার্চের কবিতা

রক্তের নদী  

রক্তের নদী, যে নদী বয়ে গেছে শহীদের হৃদয় থেকে,

এটা স্রোতের মতো, আমাদের হৃদয়ে বাজে বারবার,

যতবার সেই নদী বয়ে যায়, ততবার একেকটি শহীদের ছবি দেখা যায়,

যারা নিজের জীবন রেখে, এই ভূমিতে রক্তের আকাশ আঁকা ছিল।

তারা জানতো, মৃত্যুর পরও তাদের রক্তের নদী

চলতে থাকবে, পলকে পলকে, পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে যাবে।

এটা কোনো প্রার্থনা নয়, এটা এক অমর গান,

এটা চিরকাল বেঁচে থাকবে, মানুষের হৃদয়ে, মাটির মধ্যে।

এরা চলে গেছে, কিন্তু তাদের রক্তের নদী এখনো বয়ে চলেছে,

আমাদের প্রত্যেকটি শ্বাসের সঙ্গে, চিরকাল।

 

অগ্নির শঙ্খ

অগ্নির শঙ্খ বাজে আকাশে, তাতে তাদের নাম,

যারা ফিনিক্সের মতো আবার জন্মেছে মাটির মাঝে,

এরা জানতো, যখন পিঞ্জর ভাঙে, তখন স্বাধীনতা আসে,

এরা পুড়ে গেছে, কিন্তু তাদের পুণ্য কণ্ঠ এখন বাজে শঙ্খে।

যতবার সূর্য অস্ত যায়, তাদের চিতাভস্ম থেকে

নতুন আলো, নতুন আগুন জ্বলে ওঠে,

এরা একে একে শঙ্খের সুরে মিশে যায়,

তাদের রক্তের আগুন, স্বাধীনতার জোনাক হয়ে

আজও প্রজ্বলিত থাকে আমাদের অন্তরে, চিরকাল।

 

বিষণ্ন আকাশ

 

বিষণ্ন আকাশে ভেসে যায় শহীদের প্রতিটি পদচিহ্ন,

যেখানে রক্তের ছায়া, আর এক নিঃশ্বাসে মিশে যায়।

এরা চলে গেছে, কিন্তু তাদের প্রতিটি গল্প আজও

ঝরে পড়ে, পৃথিবীর সমস্ত কোণে।

তাদের চোখের অশ্রু ছিল না, তবে তাদের হৃদয়

জ্বলে উঠেছিল সেই আগুনে, যে আগুন পৃথিবী বদলে দেয়।

আজও, যখন আকাশে মেঘ জমে,

তাদের অশ্রু হয়ে মাটিতে বৃষ্টি নামে,

আর আমরা জানি, তারা কখনো হারায়নি,

তাদের নাম, তাদের রক্ত, এখনো অমলিন।

 

শিরস্ত্রাণের শপথ

শিরস্ত্রাণের শপথ, যেখানে লড়াইয়ের শেষ নেই,

এরা জানতো, যুদ্ধ শেষ হলেও, তাদের রক্ত কখনো শুকাবে না।

এরা নিজের শরীর, নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে,

কিন্তু তারা জানতো, একদিন তাদের কণ্ঠে বাজবে

স্বাধীনতার সুর, চিরকাল, পৃথিবীজুড়ে।

তাদের রক্ত পাথরের মতো দৃঢ়,

তাদের শপথ শিরস্ত্রাণে বন্দী হয়ে,

আজও তারা আমাদের মধ্যে জীবিত,

যতবার পৃথিবী তাদের স্মৃতি ফিরে পায়,

ততবার তাদের শপথ ফিরে আসে, চিরকাল।

 

অন্ধকারে জ্বলন্ত বাতি

অন্ধকারে জ্বলন্ত বাতি, যেখানে এক অমলিন আলো

তাদের স্মৃতি দিয়ে জ্বলে উঠেছে, দীপের মতো।

এরা জানতো, অন্ধকারে না জ্বলে ওঠা বাতি

কখনো আলোর পথে যেতে পারে না,

তাদের রক্তের সঙ্গেই ভাসে সেই আলো,

তারা নিজেই ছিলেন সেই বাতি, যারা আজও

অন্ধকারে দীপ হয়ে জ্বলে উঠেছে,

যতবার আমাদের দেশ ভুলে যায়,

ততবার তারা ফিরে আসে, আমাদের হৃদয়ে,

চিরকাল, অন্ধকারের মধ্যে এক জ্বলন্ত বাতি হয়ে।

 

হৃদয়ের কাঁপন

হৃদয়ের কাঁপন, সেই এক অদৃশ্য শব্দ

যা শহীদের অস্তিত্বের প্রতিধ্বনি হয়ে বাজে,

তারা না থাকলেও, তাদের হৃদয়ের কাঁপন

আজও আমাদের বুকে বেজে ওঠে, গভীর থেকে।

এরা জানতো, একদিন তারা হারিয়ে যাবে,

কিন্তু তাদের কাঁপন কখনো থামবে না,

এটা হবে এক অমর সুর, পৃথিবীর প্রতিটি শ্বাসের মতো।

আজও, তাদের কাঁপন আমরা অনুভব করি,

এটা কোনো গীত নয়, এটা রক্তের কাঁপন,

যে কাঁপন পৃথিবীকে এক নতুন দিশা দেখায়,

চিরকাল, আমাদের হৃদয়ে।

 

ধোঁয়ার ছায়া

ধোঁয়ার ছায়া, যে ছায়া আজও আমাদের চোখে ভাসে,

যতবার শহীদের রক্ত ঝরে, পৃথিবী তার আকাশে

বসে থাকে, পৃথিবী তার বুকের রক্তে

এক নতুন কাব্য রচনা করে, এক নতুন পৃথিবী গড়ে।

এরা জানতো, পৃথিবী না হয় তাদের শোকেই ভাসবে,

কিন্তু তাদের রক্ত কখনো মাটি থেকে উঠবে না,

এরা তাদের দেহ রেখে, রক্ত দিয়ে সৃষ্টি করেছে

এক নতুন যুগ, এক নতুন পৃথিবী,

যতবার পৃথিবী ঘুরে চলে,

তাদের ছায়া, ধোঁয়ার মতো,

এখনো আমাদের হৃদয়ে, চিরকাল।

 

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

সম্পর্কিত খবর

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য