‘থ্রি জিরো’ বিশ্ব গড়ার আহ্বান বাংলাদেশে: বিমসটেকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বের সামনে একটি সাহসী লক্ষ্য তুলে ধরেছেন—‘থ্রি জিরো’ বা শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন নিঃসরণ। তিনি এই লক্ষ্য অর্জনে বিমসটেক অঞ্চলের দেশগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দেন।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে ড. ইউনূস বলেন, “বিশ্বের ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠী নিয়ে গঠিত বিমসটেক অঞ্চল চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি সম্ভাবনার এক বিরাট ক্ষেত্র।” তিনি সমতা, সম্মান ও অভিন্ন কল্যাণে গঠিত একটি ভবিষ্যৎ নির্মাণের আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় গভীর সংস্কার বাস্তবায়ন করছে। দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ ও অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

বিমসটেক অঞ্চলের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ড. ইউনূস নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্য এবং শক্তি দক্ষতা বৃদ্ধিতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনই সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। নির্বাচন আয়োজনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে।
রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে ড. ইউনূস সতর্ক করে বলেন, এই সংকট পুরো অঞ্চলে অস্থিরতা ছড়িয়ে দিতে পারে। তিনি মিয়ানমারের সঙ্গে কার্যকর সংলাপ গড়তে বিমসটেককে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান এবং ২০২৫ সালে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা বলেন।

ড. ইউনূস যুবসমাজের সম্ভাবনা কাজে লাগানো, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তিকে কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে প্রয়োগ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এই বক্তব্যে স্পষ্ট, বাংলাদেশ শুধু নিজেদের উন্নয়নই নয়, বরং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভবিষ্যতের দিকেও নজর রাখছে—যেখানে মানুষ, পরিবেশ ও প্রযুক্তি একসাথে এগিয়ে যাবে।