বিশ্বের ১৩টি দেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণে মালয়েশিয়ায় দিনব্যাপী নানা বর্ণিল আয়োজনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গত ২১ ফেব্রুয়ারি কুয়ালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের উদ্যোগে বাংলাদেশের শহীদ দিবসকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতির পঁচিশ বছরপূর্তি উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া কুয়ালালামপুর অ্যান্ড সেলেনগর চাইনিজ অ্যাসেম্বলি হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মো. শামীম আহসান। ভাষা শহীদ ও জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এখন সারা বিশ্বে ভাষাগত বৈচিত্র্য উদযাপনের দিনে পরিণত হয়েছে। ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং স্বাধীনতার পথ দেখিয়েছে।’ এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি রাষ্ট্রদূত কেনেডি মেয়ং অনন। তিনি তার বক্তৃতায় ভাষাগত বৈচিত্র্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
ইউনেস্কো আঞ্চলিক অফিস জাকার্তার কান্ট্রি ডিরেক্টর মিসেস মাকি কাতসুনো-হায়াশিকাওয়ার ধারণকৃত বক্তব্য প্রচারিত হয়। মাকি কাতসুনো-হায়াশিকাওয়া তার ধারণকৃত বক্তব্যে বহুভাষিকতা রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এরপর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর একটি প্রামণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস, বাংলাদেশ-এর পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, ইউএনএইচসিআর-এর ডেপুটি কান্ট্রি রিপ্রেসেন্টিটিভ লেইলা নাগমানোভা ও মালয়েশিয়ার সিটি ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার ড. রামিন হাজিনাফার্ড। প্যানেল আলোচনার মডারেটর ছিলেন ডেপুটি হাই কমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ১৩টি দেশের শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এতে মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নাইজেরিয়া, রাশিয়ান ফেডারেশন, সুদান, তানজানিয়া, নেপাল, জাম্বিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, কিরগিজিস্তান ও মেক্সিকোর শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে হাই কমিশনের মিনিস্টার (রাজনৈতিক) ফারহানা আহমেদ চৌধুরীর উপস্থাপনায় বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিক, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?