বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ ধনীর সম্মিলিত সম্পদ প্রথমবারের মতো ১০ ট্রিলিয়ন ডলার (১০ লাখ কোটি) ছাড়িয়েছে। এই বিশাল অর্থ জার্মানি, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সম্মিলিত জিডিপির সমান। ২০২৪ সালে প্রযুক্তি খাতের প্রতি পুঁজিবাজারের আস্থা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচিত হওয়া এই সম্পদ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে শেয়ারবাজার ও ডিজিটাল অ্যাসেটের বাজারে উল্লম্ফনের ফলে ধনীদের সম্পদ বেড়েছে। বছরের শুরুতে শীর্ষ ১০ ধনীর মোট সম্পদ ৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বেড়ে, ব্লুমবার্গ সূচকের ইতিহাসে একদিনের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি ঘটে।
২০২৪ সালে ইলোন মাস্ক ছিলেন সম্পদ বৃদ্ধির শীর্ষে। টেসলা, স্পেসএক্স, এবং নিউরোলিংকসহ তার কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। বছরের শুরুতে মাস্কের সম্পদ ছিল ২১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার, যা ডিসেম্বর নাগাদ ৪৪ হাজার ২১০ কোটি ডলারে পৌঁছায়।
মাস্কের একটি উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন। ট্রাম্পের বিজয়ের পর শেয়ারবাজারে উল্লম্ফনের কারণে মাস্কের কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বাড়ে এবং রাতারাতি তার সম্পদে যোগ হয় ২ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার।
শীর্ষ ধনীদের তালিকা
ইলোন মাস্ক - ৪৪ হাজার ২১০ কোটি ডলার
জেফ বেজোস - ২৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার
মার্ক জাকারবার্গ - ২০ হাজার ৭০০ কোটি ডলার
ল্যারি এলিসন - ১৯ হাজার ২০০ কোটি ডলার
বেহনা আহনোঁ - ১৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলার
মার্ক জাকারবার্গের সম্পদ বেড়েছে ৮ হাজার ১০০ কোটি ডলার, মেটার শেয়ারের মূল্য ৭০% বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে। তবে ইউরোপীয় অ্যান্টিট্রাস্ট আইন অনুযায়ী জরিমানা এবং এআই প্রকল্পে বিনিয়োগের চাপ সামাল দিয়ে তিনি এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করেন।
এনভিডিয়ার সিইও জেনসেন হুয়াং ৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলার সম্পদ বৃদ্ধি করেছেন। ২০২৪ সালে এনভিডিয়ার শেয়ারদর তিন গুণ বেড়ে এটি বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিগুলোর একটি হয়ে ওঠে।
ডিজিটাল অ্যাসেটের প্রভাব
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রিপ্টো-বান্ধব নীতির প্রতিশ্রুতিতে ২০২৪ সালে ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারেও উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়। ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ডলার ছাড়িয়ে যায়।
বাইন্যান্সের চ্যাংপেং ঝাও: সম্পদ বেড়ে ৫ হাজার ৫০০ কোটি ডলার
কয়েনবেসের ব্রায়ান আর্মস্ট্রং: সম্পদ বেড়ে ১ হাজার ১১০ কোটি ডলার
বিলাসবহুল পণ্যের বাজারে ধস
ফরাসি বিলিয়নেয়ার বেহনা আহনোঁ এবং অন্যান্য বিলাসপণ্য ব্যবসায়ীরা ২০২৪ সালে ৭ হাজার ১০০ কোটি ডলার হারিয়েছেন। চীনের বাজারে বিক্রি কমে যাওয়া এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে এই পতন ঘটে।
উদীয়মান তরুণ ধনীরা
২০২৪ সালে ৬০ বছরের নিচের ধনকুবেরদের সম্পদ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ ধনীদের তালিকায় উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে, যা নতুন ব্যবসার মডেল ও প্রযুক্তি খাতের আধিপত্যের প্রতিফলন।
বিশ্বের অর্থনীতিতে প্রযুক্তি খাতের গভীর প্রভাব এবং ধনীদের সম্পদের কেন্দ্রীকরণের চিত্রটি ২০২৪ সালের ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্স থেকে স্পষ্ট।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?