এশিয়া কাপে বাঁচা-মরার লড়াইয়ের ম্যাচে এবারের আসরের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড করলো টাইগাররা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল হাসান শান্ত’র জোড়া সেঞ্চুরিতে ৩৩৪ রানের বড় সংগ্রহ তুলেছে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান, এর আগে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩২৬ রান করেছিল টাইগাররা।
রোববার পাকিস্তানের লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে ইনিংস ওপেনিংয়ে নামেন নামেন নাইম। শুরু থেকেই আফগান বোলারদের ওপর চড়াও হন নাইম। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রান তুলতে থাকেন দ্রুত। প্রথম ৭.৫ ওভারেই ৫০ রান উঠে স্কোরবোর্ডে। যদিও পাওয়ার প্লে’র শেষ বলে নাইমকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান মুজিব উর রহমান। ৩২ বলে পাঁচটি চারে ২৮ রান করেন তিনি। ছয় ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি নাইমের সেরা স্কোর।
ওয়ান ডাউনে নামা তাওহিদ হৃদয় কোনও রান না করেই ফেরেন সাজঘরে। গুলবাদিন নাইবের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে অফ সাইডে ড্রাইভ খেলতে চেয়েছিলেন হৃদয়। তবে তা ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় ফার্স্ট স্লিপে। সেখানে এক হাতে ডাইভ দিয়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন ইব্রাহীম জাদরান। ৬৩ রানে দুই উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর জুটি বেঁধে ইতিহাস রচনার পথে হাঁটতে থাকেন মেহেদি মিরাজ ও নাজমুল শান্ত। শান্তকে সাথে নিয়ে ৬৫ বলে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি করেন মিরাজ।
১১৭ বলে মিরাজ-শান্ত জুটির সেঞ্চুরি পূরণ হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ পেরিয়ে যায় দেড়শো রানের গণ্ডি। এরপরই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন নাজমুল শান্ত। ততক্ষণে খেলেছেন ৫৭ বল। টানা দুই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
এরপরের সময়টা কেবলই আফগান বোলারদের শাসন করেছে ছন্দে থাকা দুই ব্যাটার। ততক্ষণে শতকের কাছাকাছি পৌঁছে যান মিরাজ। গুলবাদিন নাইবের বলে মিড অনে ঠেলে দিয়েই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ১১৯ বলে সাতটি চার ও তিন ছক্কায় ১১২ রান করার পট বাম হাতের আঙুলে চোট পেয়ে রিটায়ার্ড হার্ড হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মিরাজকে। এর অল্প সময়ের ব্যবধানে মুজিবের বল লং অনে পাঠিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা শান্ত। ১০১ বলে নয় চার ও দুটি ছক্কায় সাজানো শান্তর ম্যাজিক্যাল সেঞ্চুরি।
সেঞ্চুরির পর শান্তকে রানআউট হয়ে ফিরতে হয়। রিভার্স সুইপ করেই দৌড় দেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ঘুরে আবার ফিরে আসতে গিয়ে পিচের উপর পিছলে পড়েন তিনি। দারুণ খেলতে থাকা মুশফিককেও ফিরতে হয়েছে রানআউট হয়ে। ১৫ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা শামীম হোসেন ক্রিজে এসে নিজের খেলা প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান। ডিপ ফাইন লেগে তার সেই ‘ট্রেড মার্ক’ শটে। পরবর্তীতে সাকিব-শামীম মিলে আরও ২৯ রান যোগ করেন দলের খাতায়। শামীমও ছয় বলে ১১ রান করে রানআউট হয়ে ফিরলে, আফিফ হোসেন সাকিবকে শেষ পর্যন্ত সঙ্গ দেন। অধিনায়ক সাকিবের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ১৮ বলে ৩২ রান।
আফগানদের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন গুলবাদিন নাইব এবং মুজিব উর রহমান।