রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশ থেকে ফেরার পর ক্যাম্পাসে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রলীগ নেত্রীরা। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
তবে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুন অভিযোগ করেন, তার অনুসারীদের ওপর সভাপতি সেলিনা আক্তার শেলীর অনুসারীরা হামলা করেছেন। আর সভাপতি দাবি করেন, কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ হয়নি।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানায়, কর্মসূচি থেকে সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে ফিরলে গেটে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে প্রথমে হালকা ধাক্কাধাক্কি লাগে। এসময় সেখানে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এসময় চিৎকারের শব্দ শুনে ঘটনাস্থলে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সেলিনা আক্তার শেলী উপস্থিত হন। আর সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুন তখনও ক্যাম্পাসে ফেরেননি।
সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের অভিযোগ, তাদের ওপর প্রথম হামলা চালান সভাপতির অনুসারী ওহি, লাবনী, লক্ষ্মী, শ্রুতি ও সাদিয়া। পরে আরও বেশ কয়েকজন মিলে হল গেটের ভেতরে টেনে নিয়ে কয়েকজনকে মারধর করেন। এতে শাকিলা, তনিমা, শাহিনুর, দোলন, হাফসাসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হন।
এ বিষয়ে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুন বলেন, সভাস্থলে কোন সংঘর্ষ হয়নি। তবে, ক্যাম্পাসে ফিরলে সভাপতি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে হামলার নির্দেশনা দিয়েছেন। আজকে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম ছিল। প্রোগ্রাম শেষে আমি বাইরে ছিলাম। সন্ধ্যায় আমার কর্মীরা ক্যাম্পাসে ফিরলে শেলীর উপস্থিতিতে তার অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা করে। আমার মেয়েদের হাত কেটে দিছে, কোমরে লাথি মারছে, ঝাড়ু দিয়ে মারছে। তার সঙ্গে সভাপতির কোনো মনমালিন্য নাই দাবি করে সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, কেন মারছে আমি জানি না।
সংঘর্ষে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সেলিনা আক্তার শেলী বলেন, এরকম কোনো কিছুই হয়নি। ছাত্রলীগের সমাবেশ শেষে আমাদের কর্মীরা কলেজ গেট দিয়ে ঢুকছিলেন। তখন আগে-পরে ঢোকা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটু কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। আমি তখন রুমে ছিলাম। চিৎকার শুনে বাইরে এসে সবাইকে ধমক দিয়ে সরে যেতে বলি। ঝামেলার সময় সাধারণ সম্পাদকের একজন কর্মীর ফোন ভেঙে যায়। আমি সেটা ঠিক করিয়ে দেবো বলেছি। আহতদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব সামান্য ঝামেলা হয়েছে। এতে কেউ আহত হওয়ার কথা নয়।
কলেজ হোস্টেলের মেট্রন মোসা. তাহমিনা খাতুন বলেন, ঘটনার সময় সভাপতি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। ঝামেলার শব্দ শুনে তিনি রুম থেকে বাইরে এসে ঝামেলা থামিয়ে দেন। ঘটনার শুরুর দিকে তিনি সেখানে ছিলেন না বা তিনি হামলা করেননি।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বিষয়টি আমি এখনও শুনিনি। এ বিষয়ে আমি অবগত নই।