সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য সরাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন।
পরে আইনজীবীরা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে তারেক রহমানের সব বক্তব্য সরাতে বিটিআরসিকে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছেন হাইকোর্ট। এদিকে রুল শুনানি করা বিচারকদের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
সোমবার তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত রুল শুনানি নিয়ে এজলাস কক্ষে শুনানির একপর্যায়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। শুনানির একপর্যায়ে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল শুনানির সময় পিছিয়ে বুধবার ধার্য করার কথা বলেন। এসময় কায়সার কামালের উদ্দেশে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, শুনানি কখন হবে সেটি আপনি বলার কে? এসময় উপস্থিত বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা হইচই শুরু করেন। পরে আদালতের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এর আগে সকালে পলাতক উল্লেখ করে তারেক রহমানের সাম্প্রতিক দেয়া সব বক্তব্য ফেসবুক, ইউটিউব থেকে সরানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। একইসঙ্গে তার বক্তব্য প্রচার বন্ধ করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করা হয়।
আইনজীবী কামরুল ইসলাম, সানজিদা খানম, অ্যাডভোকেট নাসরিন সিদ্দিকা লিনা এ আবেদন করেন। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির এ নেতার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত রুলে সম্পূরক আবেদন করা হয়।
এর আগে গত ২২ আগস্ট গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারেকের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত রুলে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আর ২৩ আগস্ট এটি কার্যতালিকায় রাখার কথাও বলা হয়।
গত ১৮ আগস্ট হাইকোর্টের নির্দেশে দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকায় তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার সংক্রান্ত রুলের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এছাড়া তারেক রহমানকে না পেয়ে তার বাড়ির দরজায় নোটিশও সাঁটানো হয়। তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ আগস্ট তার সংশোধিত গুলশানের ঠিকানায় রুলের নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ সময় আদালত প্রয়োজনে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও দিতে বলেন। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আইনের চোখে পলাতক থাকায় ২০১৫ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার নিষিদ্ধ করে নির্দেশ দেন আদালত। বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিটের আদেশে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াসহ সব ধরনের গণমাধ্যমকে এ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন।