স্যার ইয়ান বোথাম- নাম শুনলে তার পরিচয়ের বিশদ ব্যাখা করার প্রয়োজন হয় না। ইংলিশ কিংবদন্তি অলরাউন্ডার আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায়। প্রায়ই গণমাধ্যমের খবরে তার নাম আসে ম্যাচ বিশ্লেষণ কিংবা কোন বিষয়ে নিজের অভিমত জানালে। তবে এবার ভিন্ন এক কারণে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন ইয়ান বোথাম। নিজের বর্ণিল ক্যারিয়ারের অনেক পুরস্কার ও স্মারক নিলামে তুলেছেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ক্যারিয়ারে অর্জিত অনেক পুরস্কার ও স্মারক বেচে দিয়েছেন ইয়ান বোথাম। লন্ডনে সারের হোমগ্রাউন্ড ওভালের লং রুমে তাঁর ২০০–এর বেশি স্মারক নিলামে উঠানো হয়েছিলো। এরমধ্যে আছে ‘বোথামের অ্যাশেজ’ নামে খ্যাত ১৯৮১ সালের অ্যাশেজ সিরিজে জেতা কিছু পুরস্কারও। তবে এই নিলাম হুট করেই অনুষ্ঠিত হয়নি। গত মাসেই এ খবর জানিয়েছিলেন বোথাম। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘মেইল অনলাইন’ জানিয়েছে, বোথাম বাসায় এমন স্যুভেনির সংখ্যা কমাতে পুরস্কার ও স্মারকগুলো নিলামে তুলেছেন। এই নিলাম পরিচালনা করছে নরফোক অঞ্চলের নাইটস অকশনার্স।
১৯৮১ সালের অ্যাশেজ সিরিজে এজবাস্টনে চতুর্থ টেস্টে মাত্র ১ রানে অস্ট্রেলিয়ার ৫ উইকেট নিয়েছিলেন বোথাম। তাতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জিতেছিলো ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচের স্মারক বলটি ২০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে। হেডিংলিতে তৃতীয় টেস্টের একটি স্টাম্পও রেখে দিয়েছিলেন। ‘হেডিংলি ৮১’ নামের সেই স্টাম্প বোথাম বিক্রি করেছেন ১১ হাজার ডলারে। সেই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট ও ফিফটির পর ফলোঅনে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৯ রানের ইনিংস খেলেছিলেন বোথাম। ম্যাচটি জিতেও নিয়েছিলো ইংল্যান্ড। ম্যাচ সেরার পুরষ্কার উঠেছিলো বোথামের হাতে। সেই পদক ১৯ হাজার পাউন্ডে বিক্রি করেছেন বোথাম।
ইংল্যান্ড টেস্ট দলের ব্লেজার, সমারসেটের টুপিও বেচে দিয়েছেন বোথাম। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডারের দেওয়া ‘ব্যাগি গ্রিন’ টুপি বিক্রি হয়েছে ১৩ হাজার পাউন্ডে। ১৯৯২ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের যে নীল রঙের জার্সিটি পরেছিলেন, সেটিও বেচেছেন ১১ হাজার ডলারে। তবে নিলামে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হয়েছে একটি ফুটবল জার্সি। ১৯৭৭ চ্যারিটি শিল্ডে লিভারপুলের বিপক্ষে সেই জার্সি পড়ে খেলেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের সাবেক মিডফিল্ডার স্যামি ম্যাকইলরয়। ২৩ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে জার্সিটি।
ইংল্যান্ডের হয়ে ১৫ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজেকে কিংবদন্তি অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন ৬৭ বছর বয়সী বোথাম। ১০২ টেস্টে ৫২০০ রান করা সাবেক এই পেস অলরাউন্ডার ১৪টি সেঞ্চুরি ও ২২টি ফিফটি তুলে নিয়েছেন। ১১৬ ওয়ানডেতে ২১১৩ রান করলেও সেঞ্চুরি নেই। বল হাতে আছে ৩৮৩ উইকেট, ক্যাচ নিয়েছেন ১২০টি। অবসর নেওয়ার পর ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য তহবিল সংগ্রহের পাশাপাশি ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার ও কলাম লেখক হিসেবেও সুনাম কামিয়েছেন বোথাম।