আফগানিস্তানে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে যুযোপযোগী শাসনব্যবস্থার কথা বললেও একে একে নারীদের অনেক অধিকারই কেড়ে নিয়েছে তালেবান। এর মধ্যে-নারীদের স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেসরকারি সংস্থায় কাজ করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা; একা ৪৫ মাইল চেয়ে বেশি দূরে যেতে না দেয়া, গৃহ নির্যাতনের শিকার স্বামীর সংসার ছেড়ে না যাওয়া; টিভি শো, নাটক বা চলচ্চিত্রে অংশ না নেয়া ইত্যাদি।
এবার এ তালিকায় যুক্ত হলো রাজধানী কাবুলসহ অন্যান্য প্রদেশে মেয়েদের রূপচর্চা কেন্দ্র বা বিউটি পার্লার বন্ধের নির্দেশনা। দেশটির নীতি ও নৈতিকতা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ আকিফ মাজহারের বরাতে দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম টোলো নিউজে এ খবর জানানো হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
সোমবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজকে তিনি বলেন, নীতি ও নৈতিকতা মন্ত্রণালয় কাবুল মিউনিসিপ্যালকে নতুন ডিক্রি কার্যকর এবং নারীদের রূপচর্চা কেন্দ্রের লাইসেন্স বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে।
তালেবান সরকারের এমন নতুন নির্দেশনা জারির পর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন পার্লারকর্মীরা। রায়হান মুবারিজ নামের একজন মেকআপ আর্টিস্ট টোলো নিউজকে বলেন, পুরুষেরা বেকার। তারা যখন পরিবারের দায়-দায়িত্ব নিতে পারছে না তখন নারীরা বাধ্য হয়ে জীবিকার প্রয়োজনে বিউটি স্যালুনে কাজ করছে। এ অবস্থায় সরকার যদি বিউটি পার্লার নিষিদ্ধ করে, তাহলে আমাদের আর কী করার আছে!
অন্য এক মেকআপ আর্টিস্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পরিবারের পুরুষদের চাকরি থাকলে আমরা বাড়ি থেকে বের হতাম না। আমরা যদি কাজ না করি, অনাহারে মরতে হবে। এখন আপনারাই বলুন, আমাদের কী করা উচিত। আপনারা কি চান আমরা মরে যাই?
এর আগে মেয়েদের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া, এনজিওতে কাজ করা, পার্ক, সিনেমা হল, বিনোদনকেন্দ্র ও অন্যান্য জনপরিসরে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে তালেবান।
কাবুলের বাসিন্দা আব্দুল খাবির বলেন, সরকারের উচিত এর জন্য একটি কাঠামো তৈরি করা। কাঠামোটি এমন হওয়া উচিত যাতে ইসলাম বা দেশের কোনো ক্ষতি না হয়।
আফগানিস্তানের মেয়ে ও নারীদের ওপর তালেবান সরকারের এসব নিষেধাজ্ঞা দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।