রাজশাহীতে নির্বাচন কর্মকর্তাকে ‘ম্যানেজ’ করতে গিয়ে আটক আ’লীগ নেতা

রাজশাহীতে নির্বাচন কর্মকর্তাকে ‘ম্যানেজ’ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন। তিনি রাসিকের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল হামিদ সরকার টেকনের ভাগ্নে। 

লিমন রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের ভাড়া বাসায় যান। নগরীর সাগরপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন ভাড়া থাকেন।

রাতে ওই বাসায় রিমন প্রবেশ করার খবর পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন বাড়িটি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে লিমনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। লিমনকে ওই বাসা থেকে বের করার পর পুলিশ তল্লাশি শুরু করে।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, লিমন নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়িতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ঢুকেছেন। কিন্তু পুলিশ সেখান থেকে টাকা উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন তার মামা ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর আব্দুল হামিদ সরকার টেকনের পক্ষে কাজ করার জন্য নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনকে ম্যানেজ করতে যান। লিমন টাকার ব্যাগ নিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়িতে ঢুকেছেন, এমন খবরে স্থানীয় লোকজন তাকে সেখানে আটকে রাখেন।

পরে খবর পেয়ে সেখানে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। এরপর পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত হন। এরপর লিমনের বাবা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ইকবালসহ পরিবারের সদস্য এবং তার সমর্থকরা সেখানে উপস্থিত হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাসিক দত্ত বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন অপরিচিত এক ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের বাড়িতে প্রবেশ করেন। এলাকাবাসী বিষয়টি বুঝতে পেরে বাড়িটি ঘেরাও করে রাখেন। এরপরেই অপরিচিত ওই ব্যক্তিটি ব্যাগ নিয়ে কৌশলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। তবে লিমন সেখানে আটকা পড়েন।

তবে টাকা লেনদেনের কথা অস্বীকার করে নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের দাবি, ‘লিমন নির্বাচনের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে এসেছিলেন। তার সাথে কোনও টাকাপয়সার লেনদেন হয়নি।’

এত রাতে আওয়ামী লীগ নেতা লিমন কেন আপনার বাড়িতে? এমন প্রশ্নের জবাবে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি আবুল হোসেন।

এ বিষয়ে জানতে রাজশাহীর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, ‘রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা লিমনকে আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। কেন তিনি ওই নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়িতে গিয়েছিলেন তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানা যাবে।’