কয়লা সংকটে পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে কয়লা এলে চলতি মাসের শেষ নাগাদ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আবার উৎপাদনে ফিরতে পারবে। এর আগে ডলার-সংকটে কয়লা কিনতে না পারায় দুই দফায় বন্ধ হয়েছিল বাগেরহাটের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে এটি বর্তমানে উৎপাদনে রয়েছে।
পটুয়াখালীর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট মিলে উৎপাদন হয় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। তিন বছর আগে উৎপাদনে আসা পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটির এই প্রথম উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হলো। এটি বন্ধ হওয়ায় চলমান লোডশেডিংয়ে মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানায় রয়েছে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসি)।বিসিপিসির কর্মকর্তারা বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে এই কেন্দ্র দিনে গড়ে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছিল। কয়লা না থাকায় গত ২৫ মে কেন্দ্রের একটি ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়। এরপর ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বাকি ইউনিট থেকে দিনে ৩০০ থেকে ৬২০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছিল। এভাবে ২ জুন পর্যন্ত চালানোর কথা ছিল। তবে উৎপাদন কমিয়ে দুই দিন বাড়তি চালানো হয়। এখন উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল।
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে, কয়লা আসতে অন্তত ২৫ দিন সময় লাগতে পারে। সে হিসাবে জুনের শেষ সপ্তাহে আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হতে পারে। কয়লা আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে। ১২ জুন জাহাজে কয়লা তোলার কথা।
এদিকে, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিসিপিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম খোরশেদুল আলম। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বকেয়া থাকা ১০ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। তাই পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা সরবরাহ শুরু করতে যাচ্ছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। যত দ্রুত কয়লা আনা যায়, তার সবরকম চেষ্টা চলছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, তিন বছর ধরে পায়রা থেকে বিদ্যুৎ আসছে। সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এই বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন অনেক কমে যাবে। এতে বিদ্যুতের চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে বড় পার্থক্য তৈরি হবে। এ কারণে লোডশেডিং বাড়তে পারে। এমনিতেই গ্যাসের অভাবে এখন অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনা করা যাচ্ছে না।