আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট, গাজীপুরের মাটি ও মানুষের নেতা এ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে আগামী ২৫ মে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমরা জয়ের মালা ছিনিয়ে নিতে চাই। আমরা প্রত্যেকে এক একজন আজমত উল্লা হয়ে, প্রত্যেক ঘরে ঘরে গিয়ে নৌকায় ভোট চাইবো, এই ভোটের মাধ্যমেই আমরা বেঈমানদের উচিৎ শিক্ষা দেব। এসব মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী। সোমবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন উপলক্ষে গাজীপুর, টঙ্গী থানার ৪৩ ও ৪৪ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে নৌকার পক্ষে জনসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, এই গাজীপুর সিটি করপোরেশনে এর আগেও একজন মেয়র ছিল। সাবেক মেয়র যখন সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছিল, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, তখন এই বেঈমান জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সেদিন এই জাহাঙ্গীর ক্ষমা প্রার্থনা করে আবেদন করে বলেছিল, আমি আর জীবনে কোনদিন সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করবো না। সেদিন আমাদের, আপনাদের সকলের অনুরোধে শেখ হাসিনা ক্ষমা করে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, কথায় আছে চোরে শোনেনা ধর্মের কাহিনী। এই জাহাঙ্গীর কথা রাখেনি, আজকে সে সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে আবারও লিপ্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীর কার ইশারায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে সেটা আমরা ভালো করেই জানি। আমরা বেঈমান মোস্তাকদের কথা সকলেই জানি। বেঈমানদের আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আওয়ামী লীগ যদি আপনাদের সাথে না থাকে, নেতা-কর্মীরা যদি আপনার সাথে না থাকে তাহলে পায়ের নিচে মাটি থাকবে না।
বিগত দিনেও এই সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপ করেছে, যারা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তাদের অবস্থান কোথায়? বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, হেদায়েত উল্লাহ আলমগীর, ড. কামাল হোসেনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন আজ কোথাও তারা সমাদৃত না। দলের চেয়ে দেশ বড়, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। কোন ব্যক্তি দলের ঊর্ধ্বে নয়।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আজকে যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, কিছুদিন আগে সে সুইডেন গিয়েছিল। সুইডেনে গিয়ে কার সাথে ওঠাবসা করেছে, ঘুরেছে সেসব আমাদের কাছে অজানা নয়। তারেক জিয়া ও তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাথে লন্ডনে বসে কী গোপন আলাপ করেছে? কী পরামর্শ করেছে? কোথা থেকে টাকা আসে? আমরা সবই জানি।
সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের রাস্তা বর্ধিত করতে গিয়ে অনেকের জমি গেছে, বাড়ি ভাঙতে হয়েছে, সেটা অধিগ্রহণ করেছে সরকার, এই অধিগ্রহণের জন্য বাজেটের টাকা যাদের পাওয়ার কথা ছিল তারা সেই টাকা পায়নি, কোথায় গিয়েছে সেই টাকা আপনারা জানেন।
আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে নৌকার মনোনয়ন দিয়েছেন তিনি আপনাদের মানুষ। আজমত উল্লা’র স্মৃতি বিজড়িত গাজীপুরে আহসান উল্লাহ মাস্টারের খুনিরা, দুর্নীতিবাজরা একত্রিত হয়েছে। আজকে জাহাঙ্গীরের মতো একটা দুর্নীতিবাজ কোন শক্তিতে বলিয়ান হয়েছে সেটা আমাদের দেখতে হবে, জানতে হবে। বিএনপি জামাতের পেইড এজেন্ট যারা আজকে তাদের সাথে ঐক্য করে এই দুর্নীতিবাজ জাহাঙ্গীর নৌকার বিপক্ষে তার মাকে দাঁড় করিয়েছে। নির্বাচন করার দুঃসাহস দেখিয়েছে।
আনোয়ার আরও বলেন, এই জাহাঙ্গীর একটা প্রতারক। সিটি করপোরেশনের অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই কারণে আওয়ামী লীগ গাজীপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করেছে। তাকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও বাদ দেয়া হয়েছে। তাই এই প্রতারক তার মাকে ভোটে দাঁড় করিয়েছে।
ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা ২৫ তারিখ ভোটের দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করবেন।
জাহাঙ্গীরকে স্থায়ীভাবে দল থেকে বহিষ্কারের প্রসঙ্গে সাহাবুদ্দিন ফরাজী বলেন, নেত্রীর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। তার সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে কেউ রাজনীতি করবে এটা অসম্ভব। গতকাল আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ আমাদের সকলেরই একটা দাবি ছিল এই বেঈমানকে চিরতরে দল থেকে বহিষ্কার করা হোক। সেটা আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা আমাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে গাজীপুরবাসীর কথা ভেবে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে আরও প্রমাণ করেছেন উনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা।
শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে যে অমান্য করে, তার কোন স্থান আওয়ামী লীগে নেই বলেও উল্লেখ করেন ফরাজী।