ইউরিয়া জাতীয় সারের সক্ষমতা বৃদ্ধির গবেষণা করছে রাবি’র কৃষি অনুষদ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের তত্ত্বাবধানে ধান ক্ষেতে ইউরিয়া সারের অধিক ব্যবহার কমিয়ে ইউরিয়া জাতীয় সারের ক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক গবেষণা চলছে। UKRI GCRF Nitrogen Hub এর অর্থায়নে রাজশাহীর পবা উপজেলার দারুশা ইউনিয়নের বাজিতপুর গ্রামে এই গবেষণা কার্যক্রম চালু রয়েছে।

সোমবার দারুশার বাজিতপুরে কৃষক মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানিয়েছেন এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের গবেষকরা। এতে সার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ধান চাষে নাইট্রোজেন ব্যবহারের দক্ষতা বিষয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের শিক্ষক প্রফেসর ড. মাহামুদুল হোসেনের সভাপতিত্বে মাঠ দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি অনুষদের ডিন প্রফেসর মো: আব্দুল আলিম।

তিনি বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকেরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এই গবেষণা কার্যক্রমের ফলাফল কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমাতে ও ফলন বাড়াতে সাহায্য করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

কৃষক মো: হুমায়ুন কবির বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় আমরা লক্ষ্য করেছি, গুটি ইউরিয়া যদি আমরা জমিতে দিই তাহলে মোট ইউরিয়া সারের পরিমাণের তিন ভাগের এক ভাগ লাগে এবং ফলন তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।

সমাপনী বক্তব্য অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. মাহামুদুল হাসান বলেন, আমরা জমিতে যে ইউরিয়া জাতীয় সার ছিটিয়ে ব্যবহার করি তার প্রায় ৬৫ ভাগই কাজে লাগে না। এই সার বাষ্পায়িত হওয়ার ফলে মাত্র ৩০% ইউরিয়া গাছ গ্রহণ করতে পারে। যেখানে দানাদার ইউরিয়া প্রতি হেক্টরে ৩২০ কেজি প্রয়োগ করতে হয় সেখানে গুটি ইউরিয়া দিলে মাত্র ১৮০-১৯০ কেজি গুটি প্রয়োজন হয়, ফলন গুটি ইউরিয়াতে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয়। বায়োচার ব্যবহারেও প্রায় কাছাকাছি ফলাফল পাওয়া যায়। গুটি ইউরিয়া ও বায়োচার ব্যবহারে ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসৃত হয় না ফলে পরিবেশের জন্যও নিরাপদ এবং কৃষকের উৎপাদন ব্যয় কম বলে কৃষক অনেক লাভবান হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মো মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র প্রফেসর ড. মো আরিফুর রহমান, প্রফেসর ড. মো মাহমুদুল হাসান, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোছা: উম্মে সালমা, পবা কৃষি কর্মকর্তা শামসুন্নাহার ভূঁইয়াসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মো: তরিকুল ইসলাম, মো: কামরুজ্জামান, মো: শরিফুল ইসলাম, মো: রাসেল মিয়াসহ (গবেষণা সহকারী) ওই এলাকার প্রায় ৬০ জন কৃষক।