বগুড়ার সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে এবার ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে। চাষীরা বাজারে ভুট্টার দামও বেশ ভালো পাচ্ছেন। এবছর ভুট্টার চাষ গেল বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে। বেশি ফলন ও ভালো দামের কারণে ভুট্টা চাষ করে চরের চাষীদের ভাগ্য বদলাচ্ছে।
এ মৌসুমে সাত হাজার ৫১০ মেট্রিকটন ভুট্টা উৎপাদন হবে। তা থেকে ২৫৭ কোটি টাকার ভুট্টা বাজারে বিক্রি হবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
স্থানীয় চাষীরা জানিয়েছে, আগে সারিয়াকান্দির চরের চাষীরা এ সময়ে বেশিভাগই মরিচ চাষ করতেন। তবে চাষাবাদে পরিবর্তন আনায় এ মৌসুমে ব্যাপকহারে চাষ হয়েছে ভুট্টার। গত বছর এ উপজেলার প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ করা হয়েছিল। এবার সেখানে প্রায় ছয় হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে।
সারিয়াকান্দির চালুয়াবাড়ী, কাজলা, বোহাইল, হাটশেরপুর, কর্ণিবাড়ী, চন্দনবাইশা ও সদর ইউনিয়নের চরের জমির আনাচে কানাচে চাষ করা হয়েছে ভুট্টা। কোন কোন চরে ভুট্টা ছাড়া অন্য কোনও ফসলের আবাদই চোখে পড়েনা।
চাষীরা বলছেন, আগে অন্য ফসল চাষ করে তেমন একটা লাভ থাকেনি। এ বছর ভুট্টার চাষ করে লাভের মুখ দেখছি আমরা। হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া গ্রামের চাষী বাদল রহমান বলেন, আবাদ করে লাভ না থাকায় জমি বর্গা দিয়ে ট্রাক্টরের ব্যবসা ধরেছিলাম। কিন্তু এবার চরের ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করে ফলন ও দাম দুটোই ভালো পেয়েছি।
কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের ছোনপাচা চরের চাষী খয়ের উদ্দিন বলেন, ভুট্টা চাষে চরে আর্থিকভাবে এ বছর ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আমি ১৮ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছিলাম। ভুট্টা চাষে খরচ হয়েছিল প্রতি বিঘায় ১০ হাজার টাকার মতো। এরই মধ্যেই ভুট্টা জমি থেকে কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলন পাচ্ছি ৪০ থেকে ৫০ মণ। বাজারে বিক্রি করছি প্রায় এক হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে। আশা করছি এ ফসলে ভালো লাভ থাকবে আমার।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, এ মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে দামও ভালো। চাষীদের উৎপাদিত ৭০ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন ভুট্টা বিক্রি করে ২৫৭ কোটি টাকা কৃষকের ঘরে উঠবে বলে আশা করছি আমরা। ভু্ট্টা চাষের সাথে জড়িত রয়েছেন প্রায় ২২ হাজার কৃষক।