শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের কণ্ঠের সদৃশ একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফারাহ জেবিন নামের একটি ফেইসবুক প্রোফাইল থেকে ফোনালাপের অডিও পোস্ট করা হয়। অডিওটির ব্যাপারে উপাচার্যের অবস্থান জানানোর জন্য শনিবার পৃথক দুটি বিবৃতি দিয়েছে ইবি শিক্ষক সমিতি ও শাপলা ফোরাম।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত অডিওতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কথোপকথন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নজরে এসেছে। সেই অডিওতে উপাচার্যের মন্তব্যে শিক্ষক সমিতি হতবাক ও বিস্মিত। এ ধরনের মন্তব্যের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজের তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে শিক্ষক সমিতি মনে করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে তার এ ধরনের বক্তব্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ক্ষুব্ধ ও হতাশা ব্যক্ত করছে। প্রচারিত অডিও-এর বক্তব্যের বিষয়ে অনতি বিলম্বে উপাচার্য মহোদয়ের অবস্থান জানানোর জন্য অনুরোধ করছি।’
এদিকে একই ঘটনায় প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম আরেকটি বিবৃতি দিয়েছে। শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক আরেকটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি মিসেস সালাম নামের আইডিতে পোস্ট করা উপাচার্যের একটি অডিও শাপলা ফোরামের নজরে এসেছে। ওই অডিওতে তার যে কণ্ঠ এসেছে সেখানে তিনি তার সময়ের আগে ইবির সব শিক্ষক টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, কর্মকর্তা ও কর্মচারী, এমনকি নির্মাণকাজের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারেরা পর্যন্ত টাকা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত। এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিনরা কোনো কাজ না করে বঙ্গবন্ধুর নামে ‘জিকির’ করেন বলে ওই অডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়।’
শাপলা ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ দেয়া উপাচার্যের মুখে এমন কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে। তবে ওই অডিও উপাচার্যের কি না সে সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেয়াসহ তার অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য শাপলা ফোরাম আহ্বান জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম বলেন, ‘আমি তাদের প্রতিবাদলিপি দেখিও নাই, পড়িও নাই। কাউকে আবেদন করতে বললেই কি চাকরি দিয়ে দিলাম?”
অডিওটি কারা ভাইরাল করতে পারে সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি তো কারো পক্ষের না। সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারব না। কাজটা যারা করেছে আমি তাদের রুচি নিয়ে প্রশ্ন করি। তাদের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ অনুযোগ নেই।”
অডিও ফাঁসের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়েছে। ইবি থানার ওসি আননূর জায়েদ জানান, রেজিস্ট্রার থানায় একটি জিডি করেছেন। জিডিতে বলা হয়েছে একটি ফেক ফেসবুক আইডি থেকে তার কণ্ঠের ন্যায় একটি ভয়েস এডিট করে পোস্ট করা হয়েছে। এখন আমরা আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।