সাব-রেজিস্ট্রারের সহকারীর বিচার দাবিতে মানববন্ধন

সিরাজগঞ্জ সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের অফিস সহকারী মহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিক্রেতা ও দলিল লেখকের কাছে ঘুষ দাবির অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন দলিল লেখকরা। ২২ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ শহরের মুজিব সড়কে জেলা-রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে মানববন্ধন হয়েছে।  

এর আগে ২১ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ সদর সাব-রেজিস্ট্রাস অফিসের দলিল লেখকগণ নিবন্ধন অধিদপ্তর মহাপরিদর্শক শহীদুল আলম ঝিনুক, বাংলাদেশ সচিবালয়ে আইন ও বিচার বিভাগে সচিব, নিবন্ধন বাংলাদেশের (এআইআরও), সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জেলা রেজিস্ট্রার, সদর সাব-রেজিস্ট্রার, দুদদ আঞ্চলিক কার্যালয় পাবনা বরাবর মহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি গণস্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ইনসেটে অভিযুক্ত মহির উদ্দিন।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মহরার থেকে মহির উদ্দিন সিরাজগঞ্জ সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দশ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে পদোন্নতি ও সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সহকারী হিসাবে নিয়োগ পাবার পর ২০১৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সাবেক জেলা রেজিস্ট্রার জসিম উদ্দিন ভূঞার সাথে মিলে অফিসের কর্মচারীদের থেকে থেকে প্রায় দুই কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করে। মহির উদ্দিন নকল নবীস থাকার সময় থেকে তার মামা শাহজাহান আলী অফিসের রেকর্ড কিপার থাকার সুবাদে অফিসারদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে তদবীরসহ বিভিন্নভাবে প্রায় বিশ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মহির উদ্দিন শাহজাদপুর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে বদলি হয়ে চলে যায়। বর্তমানে মহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ঘুষ ও নানা দুর্নীতির বিষয়ে দুদকে একটি মামলা চলমান রয়েছে।

মানববন্ধেনে সিরাজগঞ্জ জেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন বলেন, গত নভেম্বর মাসে মহির উদ্দিন শাহজাদপুর থেকে সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যোগদান করেন। যোগদান করার পর থেকে দলিল লেখক মোঃ শামসুল আলমের নিকট প্রত্যয়নপত্র দাখিলের জন্য দুই হাজার টাকা এবং দলিল লেখক জুলহাসের নিকট থেকে ৩০ লাখ টাকার বন্ধকী ও আম-মোক্তার দলিলে জোরপূর্বক বিশ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। আবার তার বিরুদ্ধে কোন কথা বললে লাইসেন্স বাতিল করার হুমকিও দেন মহির।

সিরাজগঞ্জ জেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক বলেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি রাজস্বের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে তিনি বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী সকল দলিল লেখক, জমির ক্রেতা-বিক্রেতারা তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে আইগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানান তিনি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মহির উদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা, আমাকে হয়রানী করার জন্য এসব করছে। ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। যদিও তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগে দুদকে একটি মামলা চলমান আছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

সদর সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রশিদ মন্ডল বলেন, দলিল লেখকদের নিকট ঘুষ দাবির অভিযোগের কারণে মহির উদ্দিনকে সরকারি সকল কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখা হয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শাহজাদপুর থেকে বদলি হয়ে সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে যোগদানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এমপি’র সুপারিশে মহির উদ্দিনকে এখানে আনা হয়েছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। তার বিরুদ্ধে ঘুষ ও নানা অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।