বাবার মৃতদেহ রেখে পরীক্ষা দিলেন সামিয়া

পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ভোরে  ঘুম থেকে উঠে পড়াশোনা করতে বসেন সামিয়া। কিন্তু সকাল সাড়ে আটটায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তার। খবর আসে তার মাহাবুব সরদার গোসাইরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বাবার মৃত্যুর খবর শুনে অজ্ঞান হয়ে পড়েন সামিয়া। এরপর বাবার মৃতদেহ রেখে ফুফুর সাথে চলে যান এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে।

মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় ইদুলপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন সামিয়া। শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়ের দাইমি কোদালপুর গ্রামের মাহাবুব সরদারের মেয়ে তিনি। সরকারি সামসুর রহমান কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন সামিয়া।

তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, মাহাবুব সরদারের মৃত্যুর খবর পেয়ে আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশীদের কান্নায় হৃদয়বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বাড়িটিতে।

পরীক্ষা শেষে সামিয়া জানান, ‘কয়েকদিন ধরে বাবা জ্বরে ভুগছিলেন। আজ সকালে চা খেতে গ্রামের বাজারে গিয়েছিলেন। দোকান থেকে এসে সামিয়া বলে ডাক দিয়েই মাটিতে পড়ে যান। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাবছিলাম আমি পরীক্ষা কেন্দ্রে যাবার আগে বাবাকে হাসপাতালে দেখে যাব। এরমধ্যে খবর আসে আমার বাবা আর নেই। বাবাকে সবাই বাড়িতে নিয়ে আসলে তাকে রেখে আমি পরীক্ষার হলে যাই।’

পরীক্ষা কেন্দ্রের হল সুপার মোঃ দৌলত আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি জানার পর সামিয়াকে মানসিকভাবে সাহস দিয়ে পরীক্ষার জন্য বসাই। তাকে আমরা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করি যাতে করে সে ঠিকমত পরীক্ষা দিতে পারে।’