বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে চায় মির্জা ফখরুলরা। কিন্তু বাঙালির হৃদয় থেকে আওয়ামী লীগকে মুছে ফেলা যাবে না। মির্জা ফখরুলরা বিজয়ের মাসকে কলঙ্কিত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকেলে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা পরিষদ মাঠে জাতীয় নেতা শহীদ এম মনসুর আলী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স উদ্বোধন ও জেলহত্যা দিবসের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলাম। তখনই সামরিক জান্তা জেনারেল জিয়া ও মোস্তাকরা আবার ষড়যন্ত্র করলো। যারা বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে নয় মাস মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেই জাতীয় নেতাদের জেলখানার মধ্যে হত্যা করলো। ৭১ এ যেমন পাকিস্থানী ও দেশীয় রাজাকার বাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল সেভাবে জিয়া-এরশাদ-খালেদা আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য নির্যাতন করেছে। ওরা আমাদের হাত-পা কেটেছে। ওরা বাড়ীঘর লুট করেছে, ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষণ করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগেকে নিশ্চিহ্ন করা যায় না সেটা প্রমাণ হয়েছে।
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আপনারা এখন গণতন্ত্রের কথা বলেন, ভোটের কথা বলেন। যারা এক কোটি ২০ লাখ ফলস ভোটার বানিয়ে বিজয়ী হতে চেয়েছিল তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।
আবার একটি যুদ্ধ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সেই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সকল অপশক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। আওয়ামী লীগের সবাইকে সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সূচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. এ আরাফাত বিএনপির নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা এখন বোকার স্বর্গে বাস করেন। যারা নিজেরাই ঠিকমত চলতে পারেন না। তারাই নাকি ১১ ডিসেম্বরের পর দেশ চালাবে। এটা হাস্যকর।
তানভীর শাকিল জয় এমপি বলেন, কাজিপুরের মাটি শহীদ এম মনসুর আলী ও মোহাম্মদ নাসিমের ঘাটি। এখানে বিএনপি-জামায়াতের কোন স্থান হবে না। অতীতের মতো ২০২৪ এর নির্বাচনেও বিপুল ভোটে কাজিপুরে নৌকা বিজয়ী হবে বলে তিন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, বিএনপির এক কান তো গেছে, জনগন এবার দুই কান কেটে দেবে।
খালেদা জিয়ার কারণেই এক-১১ এর আর্বিভাব ঘটেছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুলকে তিনি প্রশ্ন করেন, কোন সংবিধানের বলে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হলেন। সেনাবানিহীতে চাকরিরত অবস্থায় কেউ নির্বাচন করতে পারে না। জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর সেই আইন ভঙ্গ করে হা না ভোটে নির্বাচন করেছিলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেফাজ উদ্দিন মাস্টারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান সিরাজীর সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কে এম হোসেন আলী হাসান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার, সিরাজগঞ্জ চেম্বার কমার্স এর প্রেসিডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ সূয্য, কাজিপুর পৌর মেয়র আব্দুল হান্নান তালুকদার।
এর আগে, দুপুরে কাজিপুর উপজেলা পরিষদের পূর্ব পাশে প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকা ব্যয়ে জাতীয় নেতা শহীদ এম মনসুর আলী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্সটি উদ্বোধন করেন নেতৃবৃন্দ।