শ্রম আইন সংশোধন করে আইএলও কনভেনশন ১০২ ও ১২১ অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় হতাহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে মানদণ্ড প্রণয়ন করা প্রয়োজন। গতকাল রানা প্লাজা ঘটনার নয় বছর স্মরণে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের (এসএনএফ) উদ্যোগে ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনার নয় বছর: শ্রমিকের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তি নিশ্চিতে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ আহ্বান জানান। সভা সঞ্চালনা করেন ব্লাস্টের উপপরিচালক (আইন) অ্যাডভোকেট মো. বরকত আলী।
রানা প্লাজার মতো ঘটনা আর যেন না ঘটে, তার জন্য কর্মস্থল নিরাপদ করতে হবে উল্লেখ করে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন্নাহার ভূইয়া বলেন, কর্মস্থল নিরাপদ হলে শ্রমিকরা যেমন নিরাপদ, তেমনি মালিকরাও নিরাপদ। তাই কর্মস্থলের নিরাপত্তা মালিকদেরই নিশ্চিত করতে হবে। শ্রম আইনের কোন কোন জায়গায় সংশোধন দরকার, তা শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে তুলে ধরতে হবে। এ সময় তিনি রানা প্লাজার ঘটনায় কতজন শ্রমিক চিকিৎসাবঞ্চিত তাদের একটা ডাটাবেজ তৈরি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে এসএনএফের আহ্বায়ক ড. হামিদা হোসেন বলেন, শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে একটি মানদণ্ড থাকা প্রয়োজন। যাতে হতাহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে না হয়। সেফটি কমিটির সদস্যদের আরো বেশি সক্রিয় হওয়া দরকার।
বিলস যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান বলেন, ক্ষতিপূরণের সমাধান টাকার অংকে হতে পারে না। এর জন্য আইএলও কনভেশন ১০২ ও ১২১-কে মানদণ্ড ধরে শ্রমিকের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করতে হবে। শ্রম আইনে শ্রমিকদের ন্যূনতম যেটুকু অধিকার রয়েছে তারা তা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অধিকার আদায়ে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) নেতা কামরূল আহসান বলেন, কলকারখানাগুলো যারা গড়েন তাদের বিধিবিধানগুলো না মানার কারণেই কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় শ্রমিকরা হতাহত হচ্ছে।
সভায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরায় শ্রমিকরা। কিন্তু মর্যাদার জায়গায় তারা বঞ্চিত। তিনি বলেন, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ওভারটাইম সবই মজুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত কিন্তু ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে আয়ের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই ক্ষতিপূরণের মানদণ্ড ঠিক করে সে অনুযায়ী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত।
সভায় অন্য বক্তারা বলেন, শ্রম আদালতে একটি মামলা শেষ হতে অনেক সময় অতিবাহিত হয়। অনেক সময় ৮-১০ বছরেও শেষ হয় না। যাতে স্বল্প সময়ে শ্রম আদালতের মামলা নিষ্পত্তি করা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে শ্রমিকদের হয়রানি কমবে না। তারা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কার্যক্রম আরো জোরদার করার আহ্বান জানান।
বক্তারা শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিতে জোর দিয়ে এবং সেফটি বিধিমালা অনুযায়ী কারখানার ভবন নির্মাণ করা, শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | |
৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ |
১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ |
২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ |
২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |