জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মী জনাব রাজু সরকারকে অভূতপূর্ব সৌজন্য দেখালো বাংলাদেশ হাই কমিশন, সিঙ্গাপুর। আজ অপরাহ্নে হাইকমিশনে অনুষ্ঠিত এক কুশল বিনিময় সভায় হাইকমিশনার জনাব মো. তৌহিদুল ইসলাম রাজু সরকারের স্বাস্থ্যের ব্যপারে খোঁজ-খবর নেন এবং তার চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য সিঙ্গাপুর সরকার ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ হাইকমিশন শুরু থেকেই তার চিকিৎসার বিষয়ে সিঙ্গাপুর সরকার, নিয়োগকারী কোম্পানি, হাসপাতাল, তার পরিবার ও নিকট-আত্বীয় এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে আসছে।
শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হলেও বর্তমানে তিনি শ্রমসাধ্য কাজ করতে পুরোপুরি সক্ষম নন বিধায় বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে নিজস্ব ব্যবসা পরিচালনার পরিকল্পনার কথা হাই কমিশন ও উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মিদের কাছে ব্যক্ত করেন রাজু সরকার। তিনি অসুস্থতাকালীন সময়ে সার্বিক সহায়তা করার জন্য সিঙ্গাপুর সরকার ও বাংলাদেশ হাইকমিশনকে ধন্যবাদ জানান এবং তার পরবর্তী চিকিৎসা, পারিবারিক ব্যয় নির্বাহ ও ব্যবসা পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ হাইকমিশনসহ সকলের নিকট সহযোগিতা চেয়েছেন। বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রাথমিকভাবে তাকে ১০০০ (এক হাজার) সিঙ্গাপুর ডলারের সহায়তা প্রদান করেছেন।
বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে যাতে তিনি ব্যবসা/কর্মসংস্থানসহ সার্বিক সহায়তা পান সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে হাইকমিশন থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে সুপারিশসহ রাজু সরকারের তথ্যাদি প্রেরণ করা হয়েছে বলে হাই কমিশন সুত্রে জানা যায়। উক্ত কুশল বিনিময় সভায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের বিভিন্ন কর্মকর্তাবৃন্দ, সিঙ্গাপুরের জাতীয় দৈনিক নিউজ টুডের সাংবাদিক মি. জাস্টিন অঙ এবং বাংলার কন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে যান ওই বাংলাদেশি কর্মী। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি চাঙ্গি জেনারেল হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি হন, ৮ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হয়। বাংলাদেশী ওই অভিবাসী কর্মী সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার প্রথম বিদেশি বলে ধারণা করা হয়। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) দুই মাসের বেশি সময় জীবন-মৃত্যু সন্ধিক্ষণে থাকা এই বাংলাদেশি আগ থেকেই ফুসফুস, কিডনি জটিলতায় ভোগার পাশাপাশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। ৬৭ দিন পর তার কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র খুলে নেয়া হয়। পুরোপুরি সুস্থ করে তোলার অংশ হিসেবে এরপর তাকে স্পিচ থেরাপি দেওয়া হয়।
আইসিইউ’তে থাকা অবস্থায় ওই বাংলাদেশি গত বছরের ৩০ মার্চ ছেলের বাবা হন। দেশের গাজীপুর জেলার অধিবাসী ৪০ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশিকে গত বছরের ১৬ এপ্রিল আইসিইউ থেকে সাধারণ ওয়ার্ডে সরিয়ে নেওয়া হয়। বর্তমানে সুস্থ হলেও পূর্ণ শক্তি পাচ্ছেন না বলে জানান রাজু সরকার। ওই সময় রাজু সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রমণসহ তার চিকিৎসার খবর সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীও করোনাকালীন সময়ের তাঁর এক বক্তব্যে উল্লেখ করেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও রাজু সরকারের চিকিৎসার খবর বেশ গুরুত্ব পায়।
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | |
৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ |
১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ |
২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ |
২৮ | ২৯ | ৩০ | ৩১ |