৯০ দেশের মিশনপ্রধানকে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ৯০টি দেশের মিশনপ্রধানদের কাছে ব্রিফ করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে ভারতে অবস্থানরত ৯০টি দেশের অনাবাসী মিশনপ্রধানদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রসচিব।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, পররাষ্ট্রসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতির অগ্রাধিকার ও গতিশীলতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বিভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক সমসাময়িক ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতদের অবহিত করেন। পররাষ্ট্রসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিদেশি মিশনপ্রধানদের অবহিত করেন মাসুদ বিন মোমেন।

এর আগে একই দিন নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এতে পররাষ্ট্র ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

বৈঠকের পর ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, বৈঠকে দু’দেশের উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, আঞ্চলিক সংযোগ, আঞ্চলিক পাওয়ার গ্রিড সংযোগ, নিরাপত্তা ও পানিসংক্রান্ত সমস্যা, কনস্যুলার এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ওপর জোর দেয়া হয়। উভয় দেশের পররাষ্ট্র সচিবগণ বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং ২০২৩ সালের অগ্রগতির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সীমান্ত নিশ্চিত করতে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সহযোগিতা অব্যাহত রাখা উচিত বলে একমত হন তারা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, তিস্তা চুক্তি এবং অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন চুক্তি, বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের বাণিজ্য বাধা দূর করা এবং দুই দেশের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিয়েও আলোচনা হয়েছে সভায়। এছাড়া রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভারতকে পাশে পেতে বাংলাদেশের ইচ্ছার কথাও ব্যক্ত করা হয়েছে আলোচনায়। 

সভায় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বাংলাদেশকে বিশ্বস্ত প্রতিবেশী হিসেবে অভিহিত করে দু’দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করার আশ্বাস দেন। এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর জোর দেন তিনি। বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নে যৌথ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে দুই দেশ।

এছাড়া দুই দেশের পরবর্তী ফরেন অফিস কনসালটেশন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় আলোচনায়।