স্পেন-বাংলাদেশ সম্পর্ক দ্রুত বিকশিত হচ্ছে: স্প্যানিশ মন্ত্রী

স্পেনের মাদ্রিদে বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। ২৬মার্চ সকালে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এসময় দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। পরে দূতাবাস রাষ্ট্রদূত সবাইকে নিয়ে জাতির পিতা ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এরপর আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। সভার শুরুতে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এছাড়াও স্বাধীনতা দিবেসের বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।

এদিকে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের হলে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কূটনীতিকদের সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্পেন সরকারের অভিবাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইসাবেলা কাস্ত্রো ফারনান্দেস। এছাড়াও স্পেন সরকারের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের পাশাপাশি মাদ্রিদস্থ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কূটনীতিক, মিশন প্রধানও পররাষ্ট্র দপ্তর, বৈদেশিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সম্পর্কিত, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা রাজনীতিবিদসহ অনারারি কউন্সিলর, স্প্যানিশ ব্যবসায়ী ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। রাষ্ট্রদূত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। কৃতজ্ঞতা জানান সব বন্ধুরাষ্ট্র, সংগঠন ও ব্যক্তির প্রতি যারা মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। 

স্প্যানিশ ভাষায় তার বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ বৈশিক পরিমন্ডলে বিস্ময়, যার মূল ভিত্তি রচনা করে গেছেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেন, ‘আমাদের গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজকে পরিপূর্ণতা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বল্পোন্নত থেকে উত্তরণের পর আজকের বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করে বাংলাদেশকে একটি প্রগতিশীল, প্রযুক্তিভিত্তিক, উন্নত ও মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কাজে সবাইকে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসাবেলা কাস্ত্রো ফারনান্দেস বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে স্পেনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বর্তমানে দুই দেশের এই বন্ধুত্ব, সম্পর্ক দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। স্পেন বর্তমানে বাংলাদেশের চতুর্থ রপ্তানি গন্তব্য উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি বাণিজ্যের পরিধি বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পরে স্পেন সরকারের অভিবাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইসাবেলা কাস্ত্রো ফারনান্দেসকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ ও তার সহধর্মিণী ফরিদা আক্তার স্বাধীনতা দিবসের কেক কাটেন।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সিদরাতুল মুনতাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয় প্রধান এটিএম আব্দুর রউফ মণ্ডল, কমার্শিয়াল কাউন্সেলর রেদোয়ান আহমেদ, কাউন্সিলর দ্বীন মোহাম্মদ ইমাদুল হক (ডিপ্লোমেটিক উইং), কাউন্সিলর মো. মোতাসিমুল ইসলাম (লেবার উইং), বার্সেলোনায় বাংলাদেশের অনারারি কন্সুল রামন পেদ্র বেরনাউস, আওয়ামী লীগ স্পেন শাখার সভাপতি এসআরআইএস রবিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম সেলিম, সহ-সভাপতি একরামুজ্জামান কিরণ, কবির হোসেন, মো. তোতা কাজী, স্পেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তামিন চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক এফএম ফারুক পাভেল, বেলাল আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, তাপস দেবনাথ, কাতালোনিয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আমির হোসেন আমু প্রমুখ।