আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস আজ। ১/১১-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় করা বিভিন্ন মামলায় ২০০৭ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
শেখ হাসিনার প্রায় এক বছরের কারাবন্দি সময়ে তার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ২৫ লাখ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে জমা দেয়। তৎকালীন সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নানা কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো। দেশ-বিদেশে শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলন জোরালো হয়। এক পর্যায়ে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
গ্রেপ্তারের দিন ভোরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই সহস্রাধিক সদস্য শেখ হাসিনার ধানমন্ডির বাসভবন সুধা সদন ঘেরাও করে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা শেখ হাসিনাকে হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তার করে সুধা সদন থেকে বের করে নিয়ে আসেন এবং বন্দি অবস্থায় তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করেন।
ওই দিন আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জামিন আবেদন আইনবহির্ভূতভাবে নামঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
শেখ হাসিনা আদালতের গেটে দাঁড়িয়ে প্রায় ৩৬ মিনিটের অগ্নিঝরা বক্তৃতার মাধ্যমে তৎকালীন সরকারের হীন-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। গ্রেপ্তারের পূর্ব মুহূর্তে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশে একটি চিঠির মাধ্যমে দেশের জনগণ এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গণতন্ত্র রক্ষায় মনোবল না হারিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
সেদিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মারমুখী ও কঠোর অবস্থানের মধ্যেও দলের নেতাকর্মীরা প্রিয় নেত্রীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানান। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা এবং বর্তমানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ মুহূর্ত নিউজকে বলেন, ‘সেদিন মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে এ দেশের গণতন্ত্রকেই অবরুদ্ধ করে সেনাসমর্থিত সরকার। কিন্তু আমরা সেদিন পুলিশের লাঠিপেটা ও মারমুখী অবস্থানের মধ্যেও আদালত এলাকায় তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলি। আমিসহ অসংখ্য নেতাকর্মী সেদিন আহত হন। পরে ২০০৮ সালের ১১ জুন দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগ ও নানামুখী ষড়যন্ত্রের পর তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।’