চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোকে এক টেবিলে বসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। মঙ্গলবার দুপুরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
বৈঠকে কী কথা হয়েছে-এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, অক্টোবরে উনাদের (যুক্তরাষ্ট্র) প্রি অ্যাসেসমেন্ট টিম আসবে। উনারা আরপিও সংশোধনের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। উনিও দেখেছেন শুনেছেন আরপিও সংশোধনে আমাদের ক্ষমতা কমিয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা উনার কাছে কীভাবে এটা বাড়ানো হয়েছে তা ব্যাখ্যা করেছি। উনি জানতে পেরেছেন, শুনেছেন, এখানকার মোর ভাইব্রেন্ট পলিটিক্যাল পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। যাদেরকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে তারা ওইভাবে ভাইব্রেন্ট নয়। এর জবাবে আমরা রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দিতে গেলে আমাদের বিধিমালা অনুযায়ী যে ধরনের ক্রাইটেরিয়া পূরণ করতে হয়, তা আমরা সেগুলো স্ট্রিকলি ফলো করেছি। এজন্য অনেক দল নিবন্ধন পায়নি। মাত্র দুটি দল নিবন্ধন পেতে পারে। তারা উপজেলা ও জেলা লেভেলে ক্রাইটেরিয়াগুলো পূরণ করেছে।
সিইসি বলেন, আমরা উনাকে বলেছি, নির্বাচনে স্বচ্ছতার জন্য মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সে প্রসঙ্গে উনি জানতে চেয়েছেন, গণমাধ্যম কর্মীদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি কি পাবেন? এর জবাবে আমরা বলেছি, এ বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় আছে। আমরা স্থানীয় পর্যায়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ওখানকার অবস্থা বিবেচনা করে মোটরসাইকেল অনুমতি দেবে। আমরাও কেন্দ্রীয়ভাবে এ বিষয়টি পর্যালোচনা করে অবহিত করব।
কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, আমরা একটা জিনিস বলেছি স্পষ্ট করে, নির্বাচনের জন্য একটা অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন, যেটা আমরা সবসময় নির্বাচন কমিশন থেকে বলে থাকি। দেশে যে সংকট বিরাজ করছে, তা রাজনৈতিক। সেটার সঙ্গে আমার কর্মের কোনও সংঘাত নেই। এ সমস্যা যদি রাজনৈতিকভাবে সেটেল হয়ে যায়, তাহলে আমাদের জন্য নির্বাচন আয়োজন করা অনেক কমফোর্টেবল হবে, অনেক সহজ হবে। আমরা প্রত্যাশা করি, রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যে প্রকট কতগুলো বিষয় রয়েছে, সেগুলো যেকোনও মূল্যে সুরাহা হয়ে যাবে।
সিইসি আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক। যেই স্থিতিশীল পরিবেশে আগামী নির্বাচন সহজ হতে পারে।
সংলাপের ওপর গুরুত্বারোপ করে সিইসি বলেন, আমরা বলেছি, উনারাও বিশ্বাস করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আসলেই সংলাপ প্রয়োজন। সংলাপ ছাড়া সংকটগুলো রাজপথে মীমাংসা করার বিষয় নয়। এটা আমি উনাকে বলেছি। এই কমিশনের পক্ষ থেকে আমি বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক দলগুলো এক টেবিলে বসা উচিত, একসঙ্গে চা খাওয়া উচিত। তারপরে আলোচনা করে এই সংকটগুলো নিরসনের চেষ্টা করা উচিত।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে পিটার হাসের সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কাউন্সিলর অরটুরো হেইনস, নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান ও ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।