রচিত হলো টাইগ্রেসদের ভারত বধের ইতিহাস

এতদিন ধরে একটি জয় অধরা ছিল ভারতের মেয়েদের বিপক্ষে। অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এলো। ওয়ানডেতে প্রথমবারের মতো ভারতের নারী ক্রিকেটারদের হারিয়ে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশের মেয়েরা।

ম্যাচের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫২ রান করে বাঘিনীরা। তবে এই লক্ষ্য তাড়া করতেই ঘাম ছুটেছে ভারতীয় মেয়েদের। শেষমেষ ১১৩ রানে আটকে গেছে ভারতের ইনিংস। এরপরই রচনা হয় নতুন ইতিহাস। এর আগে দু’দল পাঁচবার ওয়ানডেতে মুখোমুখি হলেও একটিতেও জয় পায়নি বাংলাদেশ।

বৃষ্টিতে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আজকের ম্যাচটি ছিল ৪৪ ওভারের। নিগার সুলতানাদের ১৫২ রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ভারতীয় প্রতাপশালী ব্যাটার স্মৃতি মান্ধানাকে ১১ রানেই ফিরিয়ে দেন পেসার মারুফা আক্তার। দলীয় ২৮ রানে মারুফার দ্বিতীয় শিকার হন আরেক ওপেনার প্রিয় পুনিয়া (১০)। বলতে গেলে মারুফার দাপটের কাছে আজ হেরেছে সফরকারীরা।

এরপর নাহিদা আক্তারের ঘূর্ণির ফাঁদে পড়ে ভারতীয় অধিনায়ক হারমনপ্রীত কৌর সাজঘরে ফিরেন। পাঁচ বলে পাঁচ রান করে এলবিডাব্লিউ’র শিকার হন কৌর। ২৪ বলে ১৫ রান করে যস্তিকা ভাটিয়া বাংলাদেশের চতুর্থ শিকার হন। এরপর পঞ্চম উইকেটে জেমিমাহ রুদ্রিগেজ ও দিপ্তী শর্মা মিলে প্রতিরোধ গড়তে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। রাবেয়ার লেগ স্পিনে জেমিমাহ ১০ রান করে সাজঘরে ফিরলে তাদের ১৭ রানের জুটি ভাঙে।

তখনও এক প্রান্তে কৈ মাছের প্রাণ হয়ে ছিলেন দিপ্তী শর্মা। অভিষিক্ত আমানজোত কৌরকে সাথে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৩০ রানের জুটি গড়ে লড়াই জারি রাখেন। কিন্তু মারুফা পর পর দুই বলে আমানজোত ও স্নেহা রানাকে ফেরানোর পর ম্যাচের ড্রাইভিং সিটের দখল নেয় টাইগ্রেসরা। আমানজোত ১৫ রানে আউট হওয়ার পরের ওভারে নাহিদার শিকার হন দিপ্তী। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ বলে ২০ রান আসে তার ব্যাট থেকেই। শেষ ব্যাটার হিসেবে বারেডি আনুশা রান আউট হলে ৩৫.৫ ওভারে ১১৩ রানে থামে ভারতের ইনিংস।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন পেসার মারুফা। সাত ওভারে ২৪ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়ে  ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও তারই দখলে। এছাড়াও লেগ স্পিনার রাবেয়া খাতুন ২৩ রানে নেন তিন উইকেট। আর নাহিদা আক্তার ও সুলতানা খাতুন নেন একটি করে উইকেট।

মিরপুরে হোম অব ক্রিকেটে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। শুরুতেই দুই ওপেনার মোর্শেদা খাতুন (১৩) ও  শামিমা আক্তার সুপ্তাকে (০) হোঁচট খায় স্বাগতিকরা। তৃতীয় উইকেট জুটিতে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ও ফারজানা হক ৪৯ রানের জুটি গড়ে কিছুটা ধাক্কা সামলান। তাদের জুটি ভাঙার পর ফের বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। বিদায় নেওয়ার আগে ফারজানা হক ২৭ রান করেন। জ্যোতি এক প্রান্ত আগলে থেকে লড়াইয়ের চেষ্টা করেও বেশি দূর যেতে পারেননি। ৩১তম ওভারে দলের রান ১০০ ছাড়ানোর পর আউট হন তখন তার নামের পাশে শোভা পাচ্ছিল ৬৪ বলে ৩৯ রান।

আজকের ম্যাচে অসুস্থতার কারণে মাঠে নামতে পারেননি মিডল অর্ডার ব্যাটার স্বর্ণা আক্তার। শেষ দিকে রাবেয়া খান (১০), ফাহিমা খাতুন (১২) ও সুলতানা খাতুনের (১৬) ব্যাটিংয়ে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫২ রানে।

ভারতীয় বোলারদের মধ্যে অভিষিক্ত আমানজোত কৌর সর্বোচ্চ চারট উইকেট নিয়েছেন আর দেবিকা বৈদ্য নেন দুটি।