অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আবারও প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোট দেবে।
মঙ্গলবার ‘শেখ হাসিনা সরণি’ (পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে), চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ ১৫৭ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এসব প্রকল্পের উদ্বোধন-ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের ৯ হাজার ৯৯৫টি অবকাঠামো উদ্বোধন করেন। আর ৪৬টি অবকাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে। হয়তো দু-এক দিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ও সময় (তপশিল) ঘোষণা করবে। জনগণের ভোটের অধিকার আমরাই নিশ্চিত করেছি। কাজেই জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোট দেবে।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অনেকে নির্বাচনে আসতে চায় না। কারণ, যারা ৩০টি সিট পেয়েছিল (২০০৮ সালে), স্বাভাবিকভাবে তাদের নির্বাচনে আসার কোনও আকাঙ্ক্ষা থাকবে না। নির্বাচন বানচাল করে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে আবার বাংলাদেশের মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলাই তাদের চেষ্টা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি জানি, এ দেশের মানুষ একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, উন্নয়ন দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময়ে এই অবরোধ আর অগ্নিসন্ত্রাস, জালাও-পোড়াও। গাড়িতে আগুন, বাসে আগুন দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা যেমন ব্যাহত করা হচ্ছে, স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা ঠিকভাবে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারছে না। তাদের লেখাপড়া নষ্ট হচ্ছে।’
সরকারপ্রধান জানান, বিএনপির আমলে যেখানে সাক্ষরতার হার ছিল মাত্র ৪৫, সেখান থেকে তারা সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৬ ভাগে উন্নীত করেছেন। আজকে সব ছেলেমেয়ে, প্রায় ৯৮ ভাগ ছেলে-মেয়ে স্কুলে যাচ্ছে। সবকিছু আজকে ব্যাহত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এসময় অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসীকেও বলব যে এই অগ্নিসন্ত্রাস আপনাদের প্রতিরোধ করতে হবে। সবারই জানমাল আছে। ২০১৩–১৪ ও পরবর্তী সময়ে যে অগ্নিসন্ত্রাস, ভুক্তভোগীদের যন্ত্রণা ও কষ্ট আমরা দেখেছি, কাজেই এই ভোগান্তি যেন মানুষের আর না হয়।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।