মাদারীপুর আয়কর অফিসে সেবা পেতে টাকা লাগে

আয়কর অফিসে সেবা নিতে গিয়ে টাকা দেয়া বা ভোগান্তি ছাড়া কোনও সেবা মিলে না। এমন অভিযোগ রয়েছে মাদারীপুর আয়কর অফিসের বিরুদ্ধে। রিটার্ন ফরম পূরণ করতে ৫০০-৫০০০ টাকা নেন ওই অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আয়কর সনদ নিতে নূন্যতম এক হাজার টাকা দিতে হয়। এসব ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে।

গত ৮ আগস্ট সরেজমিনে দেখা যায়, নয়াকান্দি বাজিতপুর থেকে আয়কর সনদ নিতে এসেছেন কৃষক দুলাল মন্ডল। তিনি জানান, ‘জমির দলিল করতে জরুরি আয়কর সনদ লাগবে। আমি অফিসে আসার পর মনির উজ জামানের কাছে বললে তিনি আমার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা চেয়েছেন। আমি দুই হাজার টাকা দিয়ে আয়কর সনদ নিয়েছে।’

বিষয়টি নিয়ে আয়কর অফিসের স্টেনো টাইপিস্ট মনির উজ জামান এর সাথে কথা বললে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। বলেন, ‘উনি কৃষক মানুষ লিখতে পারে না, জমি দলিল করতে আয়কর সনদ লাগবে রিটার্ন জমা দিবেন। ফরম পূরণ করতে পারে না আমাকে বলছে লিখে দেন। আমি লিখে দিয়েছি। উনি খুশি হয়ে আমাকে চা খেতে দুই হাজার টাকা দিয়েছেন।’

এমন অনেক অভিযোগ রয়েছে এই অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পিডব্লিউডি কর্মকর্তা জানান, আমি তিন বছর রিটার্ন জমা না দেওয়ায় জরিমানার অজুহাত দেখিয়ে প্রথমে ১০ হাজার টাকা দাবি প্রধান সহকারী। পরে আমার জরুরি প্রয়োজনে তাকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে আয়কর সার্টিফিকেট আনি।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সার্কেল-১৪৪ এর উপ কর কমিশনার ইনজামাম উল হক বলেন, আমি জয়েন করার পর থেকে এই ধরনের অভিযোগ এখনো পাইনি। আমার অফিসে কেউ টাকার বিনিময়ে বা জোরপূর্বক করদাতার কাছ থেকে টাকা আদায় করছে আমার জানা নাই। যদি কেউ লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

মাদারীপুরে নিবন্ধিত করদাতা আছে ৪৮ হাজার ৪৭২ জন। এর মধ্যে কর প্রদান করেন ১১ হাজার। ২০২২-২০২৩ কর বছরে কর আদায় হয়েছে ১১০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। করদাতাদের রিটার্ন ফরম পূরণে সহায়তার প্রয়োজন হলে তাদের সহায়তার জন্য জেলায় আয়কর আইনজীবী প্রাকটিশনাররা রয়েছেন। এরপরও নানা অজুহাতে করদাতাদের ভোগান্তি পেতে হয় আয়কর অফিসে।