শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহারুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে তার দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক অংশীদার জয়ন্ত কুমার দত্তের পরিবারকে পথে বসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোতাহারুল ইসলাম লিটনের ৩৫ বছরেরও বেশি সময়ের ব্যবসায়িক অংশীদার জয়ন্ত কুমার দত্ত পিন্টু। তারা যৌথভাবে পেট্রোল পাম্প, ইটের ভাটা, বিসিআইসি ডিলারশিপ ও জমি কেনাবেচার ব্যবসায় করতেন। অভিযোগ আছে, ২০২০ সাল থেকে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর কিছু নিজ নামে চালাচ্ছেন লিটন আর যেগুলো পারেননি সেগুলো হুমকি ধামকি দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী পিন্টু জানান, পেট্রোল পাম্পটি যৌথ মালিকানায় যদিও লাইসেন্স মোতাহারুল ইসলাম লিটনের নামে আর পাম্পটিতে দুজনের সমান সমান জমি। ব্যবসাটি এখন লিটন একাই পরিচালনা করছেন। গত সাড়ে তিন বছর ধরে পিন্টু দত্তকে কোনও লভ্যাংশ তো পরের কথা, হিসাবও দিচ্ছেন না।
নিজের নামে করা বিসিআইসি ডিলারশিপটা মোতাহারুলই পরিচালনা করছেন, একক ব্যবসা হিসেবে।
ইট ভাটার লাইসেন্স জয়ন্ত কুমার দত্ত পিন্টুর নামে। সমস্ত হিসাবপত্র, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র থেকে জমি সবই তার নামে। কিন্তু নির্যাতন আর হুমকি ধামকি দিয়ে গত সাড়ে তিন বছর ধরে ইটভাটা বন্ধ করে রেখেছেন মোতাহার হোসেন। এখনও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পিন্টু দত্তকে ভাটা পরিচালনা করতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া লিটন ও পিন্টুর নামে তাঁতিহাটি মৌজায় কেনা ৯ একর করে মোট ১৮ একর জমি লিটন লিজ দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু পিন্টুকে জমির লিজ বাবদ কোনও আর্থিক সুবিধা দেন না লিটন।
এভাবেই আর্থিক অনটনে পড়ে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের জয়ন্ত দত্ত পিন্টু পরিবারের ব্যয়ভার ও সন্তানের পড়াশোনার খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। বিষয়গুলো নিয়ে মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত তার সমস্যার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও সুরাহা পাননি খোদ আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকা পিন্টু দত্ত। পরিবারের ব্যয় নিয়ে উদ্বিগ্ন পিন্টু দ্রুত একটি সুরাহা চান।
এ ব্যাপারে মোতাহারুল ইসলাম লিটনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন ছানু বলেন, ‘এ ঘটনা আমি জানি। জয়ন্ত দত্ত পিন্টু মোতাহারুল ইসলাম লিটনের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ীক অংশীদার। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে লিটন সবকিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। এমনকি ইটভাটার কার্যক্রমও চালাতে দিচ্ছেন না পিন্টুকে।
তিনি আরও বলেন, লিটনের বাবা শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। লিটনও সম্প্রতি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন।