আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণনাশের হুমকিদাতা রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ।
সোমবার (২২ মে) বিকেল পাঁচটায় নগরীর রাণীবাজারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে থেকে বিএনপি নেতা আবু সাইদ চাঁদেএর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল।
প্রতিবাদ সমাবেশে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদের পিতা রাজাকার ছিলেন। বিএনপিতে তারাই নেতৃত্ব দিবেন এটাই স্বাভাবিক। কারণ তাদের জন্মদাতা জিয়াউর রহমান নামে মুক্তিযোদ্ধা হলেও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে ৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার নেপথ্যে সব ধরনের কলকাঠি নাড়েন। সামনে ছিলেন শিখন্ডী খন্দকার মোস্তাক। যাকে কাঠের পুতুলের মতো ব্যবহার করা হয়।
খায়রুজ্জামান লিটন আরও বলেন, বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদ যে কথাটি বলেছে সেটি বিচ্ছিন্ন কোন কথা নয়। সেটা তারেক জিয়ার কথা। সেটা লন্ডন থেকে এসে চাঁদের মাথায় ঢুকেছে। এর পরিণতি কতটা ভয়ানক হবে, সে এখনো ভাবতে পারছে না।
আবু সাঈদ চাঁদকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক, এটি আমরা চাই। ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে, আরও মামলা হবে। শুধু মামলা দিয়ে নয়, সে রাজশাহী শহরে এলে তাকে গণধোলাই দেওয়া হবে। রাজশাহীতে আমরা এর আগেও চাঁদকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছি, আবারও অবাঞ্চিত ঘোষণা করছি।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি নামক দলটি বাংলাদেশের জন্য ক্যান্সার। এই ক্যান্সারকে বাংলাদেশ থেকে চিরতরে মুছে ফেলা দরকার। তা না হলে বাংলাদেশ স্বস্তি পাচ্ছে না। খুনি জিয়া যেমন এদেশের কুসন্তান, তেমনি তারেক রহমানও কুলাঙ্গার। কুলাঙ্গার তারেক জিয়া লন্ডনে বসে নানা রকম ষড়যন্ত্র করছে। স্বাধীনতার পর হত্যা, খুন ও গুমের রাজনীতি শুরু করে বিএনপি। আবারও সেই রাজনীতি করে তারা ক্ষমতায় আসতে চায়। তাদের মানুষ জ্বালাও পোড়াও এর চিন্তা এখনো যায়নি। সুযোগ পেলে তারা আবারও জ্বালাও পোড়াও করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, ‘রেজা কিবরিয়ার মতো লোক আমেরিকাকে বলে ‘ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’ ভাইয়েরা, এটি কি মেনে নেওয়ার কথা? কখনোই না। ছাত্রলীগ মানে বাংলাদেশের ইতিহাস, ছাত্রলীগ মানে নতুন দেশ গড়ার কারিগর। সেই ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলার সাহস রেজা কিবরিয়া বা কতিপয় সুশীল কোথা থেকে পায়?’
সদ্য সাবেক রাসিক মেয়র বলেন, সোজা পথে নির্বাচনে এলে জনগণ ভোট দিবে না জেনে বিএনপি নানা রকম পাঁয়তারা করছে। কখনো বলে কেয়ারটেকার সরকার দিতেই হবে। কখনো বলে শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। কখনো বলে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। এই কথাতেই উসকানির আভাস পাওয়া যায়।
আমরা স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ, আমরা সহজ-সরল মানুষ। আমরা দেশের উন্নয়ন করতে চাই। দেশ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে এমন কোন পদক্ষেপ আমরা নিতে চাই না, কখনো নিইনি। কারণ যে মা সন্তানের জন্ম দেয়, সেই মা সন্তানের কোন ক্ষতি করতে পারে না। আমরা দেশের কল্যাণই কাজ করে যাব। দেশের মানুষের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবে এমন কোন কাজ আমরা হতে দেব না।
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য বেগম আখতার জাহান, রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের রায়হানুল হক, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেণী, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। সঞ্চালনা করেন নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু।
কর্মসূচিতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, সৈয়দ শাহাদত হোসেন, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, নাইমুল হুদা রানা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আসলাম সরকারসহ মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।