বার্ষিক উন্নয়ন ফি না পেয়ে অর্থসংকটে জাবি’র বিভাগগুলো


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোকে প্রশাসন থেকে সাত মাসেও উন্নয়ন ফি বাবদ টাকা দেওয়া হয়নি। এজন্য বিভাগীয় বিভিন্ন কার্যক্রম চালাতে আর্থিকভাবে হিমশিম খাচ্ছে বিভাগগুলো। সাধারণত নতুন ব্যাচে শিক্ষার্থী ভর্তির পরপরই উন্নয়ন ফি বাবদ টাকা প্রশাসন থেকে বিভাগগুলোকে দেওয়া হয়।

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম গত বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হলেও বিভাগগুলো এখনো উন্নয়ন ফি পায়নি। বৃহস্পতিবার বার্ষিক উন্নয়ন ফি চেয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিরা। স্মারকলিপিতে বিভিন্ন অনুষদের ২৭টি বিভাগের সভাপতি স্বাক্ষর করেছেন।

এর আগে, গত মার্চ মাসে কলা ও মানবিক অনুষদের বিভাগগুলো একই দাবিতে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয়।

উপাচার্য বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে তারা দুই দফা দাবি জানান। শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে বিভাগ, ইনস্টিটিউটসমূহে গতবছরের ন্যায় প্রথম বর্ষে ভর্তিকৃত প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বিপরীতে ছয় হাজার টাকা বিভাগ উন্নয়ন ফি প্রদান করতে হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতির টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২২-২০২৩) থেকে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিটি বিভাগ/ইনস্টিটিউট এর হিসাব নম্বরে নির্ধারিত বিভাগ উন্নয়ন ফি অতীতের ন্যায় সরাসরি প্রদান করা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর সভাপতিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভর্তির সময় বিভাগের উন্নয়ন ফি হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নেওয়া হতো। কিন্তু ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ফারজানা ইসলামের সময় শিক্ষার্থীরা বিভাগ উন্নয়ন ফি বাতিলের দাবি জানান। তাদের আন্দোলনের মুখে সে নিয়ম বাতিল করে ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই উন্নয়ন ফি ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রির আয় থেকে দেওয়া শুরু করে প্রশাসন। ২০১৯-২০, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এই উন্নয়ন ফি দেওয়া হলেও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে এখনো দেওয়া হয়নি।

স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করা শিক্ষকদের একজন দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ ভূঁইয়া। তিনি অভিযোগ করেন, ‘উন্নয়ন ফি না পেয়ে আমাদের বিভাগের অবস্থা বেহাল। আমরা কাজ করতে পারছি না। একাডেমিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। বিভাগ উন্নয়ন ফি’র টাকা আসে ভর্তি পরীক্ষায় ফরম বিক্রির আয় থেকে। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি করে ১৯ কোটি টাকা আয় করে যথাসময়ে বিভাগের উন্নয়নের জন্য ফি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ফরম বিক্রির ২২ কোটি টাকা পাওয়ার পরও এখন পর্যন্ত উন্নয়ন ফি দিতে পারছে না। এই টাকা কোথায় যায়?’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।