বগুড়ায় ধান কাটতে হারভেস্টরে নির্ভরতা বাড়ছে চাষিদের

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় চাষাবাদে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়ছে। কৃষিতে আধুনকি প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় কৃষকদের সময় যেমন বাঁচছে, অন্যদিকে খরচও কমছে বহুগুণ।

প্রযুক্তি নির্ভরতায় বগুড়ার চরাঞ্চলেরসহ বিল এলাকার চাষিরাও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। বিশেষ করে ধান কাটতে কমবাইন্ড হারভেস্টর মেশিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে চাষিদের কাছে।

স্থানীয়রা জানান, এ উপজেলায় বহুদিন আগে থেকে গরুর হালের বদলে মেশিনের লাঙ্গল, সেচ কাজে সেচ পাম্প, নিড়ানী মেশিন, ওষুধ স্প্রে ক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি আগে থেকে ব্যবহার হলেও ইদানীং এখানকার কৃষকরা ধান কাটতে শ্রমিক সংকটে পড়েন। তবে মাঠে এখন কমবাইন্ড হারভেস্টর ব্যবহার করছেন অনেক চাষি। ফলে ধান কাটা শ্রমিকের জন্য আর হাহুতাশ করতে হচ্ছেনা তাদের। এই নেশিন ব্যবহার করে তারা একসাথে তিনটি সুবিধা পাচ্ছেন। দ্রুত ধান কাটার পাশাপাশি মাড়াই ও বস্তাবন্দি করা যায় এই মেশিনে।

এই এলাকায় যে হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে সেটি গাজিপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা মাধবপুর গ্রামের কৃঞ্চচন্দ্র নামের এক ব্যক্তির। কৃষ্ণচন্দ্র জানান, ‘আমি পাঁচ বছর আগে কমবাইন্ড হারভেস্টর মেশিন কিনেছিলাম। প্রথমে তেমন সাড়া পাইনি তবে, বর্তমানে এই মেশিনের চাহিদা বেড়েছে বহুগুণ। এই সময় ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই আমার।’

জমির আয়তন বড় হলে এই মেশিনে ঘন্টায় এক একর জমির ধান কাটতে পারে। প্রতি বিঘা জমির ধান কাটার জন্য তিন হাজার টাকা খরচ ধরা হয়। শ্রমিক, তেল ইত্যাদি খরচ বাদে প্রতি বিঘায় লাভ থাকে হাজার দুয়েক টাকা। তবে মেশিনের ব্যাপক চাহিদা থাকায় আমরা সবাইকে সময় দিতে পারছিনা বলেও জানান কৃষ্ণচন্দ্র।

ফুলবাড়ী ইউনিয়নে আমতলী গ্রামের আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে বিআর-২৯ জাতের ধান লাগিয়েছিলাম। আকাশের কালো মেঘের আনাগোনা অন্যদিকে শ্রমিক সংকটের কারণে কয়েক দিন নির্ঘুম রাত কেটেছে আমার। বুধবার ঘন্টাখানে এরমধ্যেই পুরো জমির ধানকাটা-মাড়াই করতে আমি খুব খুশি। ঘরে সোনালী ধান দেখে মন ভরেছে পরিবারের সবার।

উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, উপজেলায় চর ও বিল এলাকায় সমানতালে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি। এ ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার ভর্তুকি দেওয়ায় চাষিরা চাষাবাদে সহজেই ব্যবহার করতে পারছেন আধুনকি যন্ত্রপাতি। এর ফলে সরকারের খাদ্য উৎপাদনে লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব হচ্ছে আমাদের।

উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৮২ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। বাকী ধান আগামী সাত দিনের মধ্যে কাটা হবে বলে আশা করা যায়। এ এলাকায় ৩০টি ধান কাটা হারভেস্টর মেশিন কাজ করছে।