বগুড়ায় অব্যাহতি পাওয়া ছাত্রলীগ নেতার পাল্টা কমিটি 

বগুড়ার গাবতলীতে ছাত্রলীগের অব্যাহতি পাওয়া এক নেতা উপজেলা শাখার পাল্টা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার নয়ন মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা দেওয়া আব্দুল গফুর বিপ্লব গাবতলী উপজেলা ছাত্রলীগের অব্যাহতি পাওয়া সাধারণ সম্পাদক। গত বছরের চার ডিসেম্বর বগুড়া জেলা ছাত্রলীগ দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপের অভিযোগ এনে তাকে অব্যাহতি দেয়।

জানা যায়, ২০২১ সালের সাত জানুয়ারি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাঈমুর রাজ্জাক তিতাস ও সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায় গাবতলী উপজেলা শাখার কমিটি ঘোষণা করেন। ওই কমিটিতে মিজনুর রহমান পান্নাকে সভাপতি ও আব্দুল গফুর বিপ্লবকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

গত বছর ২০২২ সালের সাত নভেম্বর রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সজীব সাহাকে সভাপতি এবং আল-মাহিদুল ইসলাম জয়কে বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে। তারা দু’জনেই বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনুর অনুসারী। অপরদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহনের অনুসারীদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের এক নেতার পছন্দেই দু’জনকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করায় অন্য নেতাকর্মীরা সাত নভেম্বর রাত থেকেই আন্দোলন শুরু করেন। আব্দুল গফুর বিপ্লব আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম মোহনের অনুসারী হওয়ায় প্রথম থেকেই জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে চলা ওই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। পরে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগ গত বছরের চার ডিসেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপের অভিযোগে তাকে অব্যাহতি দেয়। এসময় উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারাণ সম্পাদক আব্দুর রাকিবকে ভারপ্রাপ্ত সাধারাণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পরে এ বছরের দুই ফেব্রুয়ারি বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গাবতলী উপজেলা শাখার ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে। এতে মিজানুর রহমান পান্নাকে সভাপতি ও আব্দুর রাকিবকে ভারপ্রাপ্ত সাধারাণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের চলমান এই দ্বন্দ্বের জেরে গাবতলী উপজেলা শাখার অব্যাহতি পাওয়া সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর বিপ্লব ৭১ জন সদস্য নিয়ে পাল্টা এ কমিটি ঘোষণা করেছেন।

গাবতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান পান্না জানান, সংগঠন পরিপন্থী কাজ করায় জেলা ছাত্রলীগ বিপ্লবকে অব্যাহতি দিয়েছে। মানুষ হাসানোর জন্য তারা দুর্বত্তদের নিয়ে একটি কমিটি দিয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে জেলার দায়িত্বশীলদের এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হবে।
 
নতুন কমিটি ঘোষণা দেওয়া আব্দুল গফুর বিপ্লব জানান, ছাত্রলীগের প্রকৃত কর্মীদের নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বগুড়া জেলা ছাত্রলীগ যে কমিটি দিয়েছে সেখানে অছাত্র ও মাদকসেবীরা জায়গা পেয়েছেন। অব্যাহতি দেওয়ার সময় আমাকে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ তারা জানায়নি। জেলা ছাত্রলীগের দেওয়া তথাকথিত কমিটির প্রতি আমাদের চ্যালেঞ্জ, মাঠের রাজনীতিতে আমরাই থাকব।

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয় জানান, সংগঠন পরিপন্থী কাজ করায় অব্যাহতি পাওয়া এক নেতা গাবতলী উপজেলা ছাত্রলীগের তথাকথিক কমিটি দিয়েছে। বিষয়টি নজরে এসেছে। এ বিষয়ে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।