প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমআরটি পুলিশ সদস্যরা

আনুষ্ঠানিকভাবে মেট্রোরেলের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে কিছুদিন দেরি আছে। তবে এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পুলিশ। দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার জন্য পুলিশের এই বিশেষায়িত ইউনিটকে প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি স্টেশনে একজন পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে ১১ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। ২৪ ঘণ্টা মেট্রোরেল কেন্দ্রিক শিফট করে ডিউটি করবেন তারা। যাত্রী নিরাপত্তা, স্টেশনের নিরাপত্তা, চলাচলরত মেট্রোরেল লাইনের নিরাপত্তা, মেট্রোরেলে ভিক্ষাবৃত্তি ঠেকানোসহ বিভিন্ন বিষয় দেখভাল করবেন এমআরটি পুলিশ সদস্যরা।

এমআরটি পুলিশের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় মেট্রোরেলের চলাচল। এখন পর্যন্ত এমআরটি পুলিশের টেস্ট ডেপ্লয়মেন্ট চলছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব শুরু করতে কিছুটা সময় লাগবে।

তিনি আরও জানান, শনিবার (২১ অক্টোবর) মেট্রোরেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও এমআরটি পুলিশের কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি আগারগাঁও থেকে উত্তরা, উত্তরা থেকে আগারগাঁও মেট্রোরেলে ভ্রমণ করবেন। তাকে এমআরটি পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা বিভিন্ন পদক্ষেপ জানানো ও দেখানো হবে। যদিও এমআরটি পুলিশ শুধু স্টেশন ও উপরে লাইনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে, সে কারণে নিচের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কীভাবে বজায় রাখা হবে তা ডিএমপি কমিশনারের কাছে তুলে ধরা হবে। এরপর এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ডিএমপির কী ধরনের সম্পৃক্ততা থাকবে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন।

মেট্রোরেল চলাচল শুরুর পর ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল ঢিল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এতে মেট্রোরেলের একটি কাঁচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা মেরামত করতে খরচ হয় ১০ লাখ টাকা। এ ঘটনার পর মামলা দায়ের করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আইনের আওতায় আনতে পারেনি কাফরুল থানা পুলিশ। এমনকি কোথা থেকে ঢিল ছোড়া হয়েছিল, কারা ঢিল ছুড়েছে, কোন ভবন থেকে ছোড়া হয়েছিল, এখন পর্যন্ত তদন্তে এসবের কোনও হদিসও মেলেনি। তারপরও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

মেট্রোরেলে ঢিল ছোড়ার ঘটনায় মিরপুর বিভাগের কাফরুল থানায় দায়ের হওয়া মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক অপারেশনস আব্দুল বাতেন জানিয়েছেন, কারা মেট্রোরেল ঢিল ছোড়ার ঘটনা ঘটিয়েছে তা শনাক্ত করতে তদন্ত চলমান রয়েছে। যদি কোনও তথ্য পাওয়া যায় তাহলে তা সিনিয়র স্যারদের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

এমআরটি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যেসব স্টেশন রয়েছে, প্রতিটি স্টেশনে ১১ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশে মেট্রোরেল যাতায়াত শুরু করলে পরবর্তীতে লোকবল বাড়ানো হবে। এরইমধ্যে যারা দায়িত্ব পালন করবেন তাদের বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে, প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। মেট্রোরেল একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই), তাই এর নিরাপত্তার বিষয়টিও বেশ স্পর্শকাতর।

এমআরটি পুলিশের প্রধান ডিআইজি জিহাদুল কবির জানিয়েছেন, বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৫৩৭ জন সদস্য নিয়ে কাজ শুরু করতে যাচ্ছে এমআরটি পুলিশ। এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এমআরটি পুলিশের যাত্রা শুরু হয়নি। তবে প্রাথমিক কাজগুলো সম্পন্ন করা হচ্ছে। এমআরটি পুলিশের নিরাপত্তার বিষয়গুলো সম্পর্কে দায়িত্বরত সদস্যরা অবহিত হচ্ছেন।