জলবায়ু সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে (কপ ২৮) সংবাদ গ্রহণের প্রস্তুতির জন্য “Journalism in the Age of Climate Action: COP-28 Coverage Strategies and Mentoring” শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) আয়োজনে এবং অন্যান্য ৯টি পরিবেশবাদী সংগঠন কর্মশালাটির আয়োজন করে। জলবায়ু সম্মেলন অংশগ্রহণ করবেন এমন প্রায় শতাধিক এর বেশি সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মীর দক্ষতা উন্নয়ন ও মেনটরিং কর্মশালায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
৩ ও ৪ নভেম্বর, দুই দিনব্যাপী প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর কনফারেন্স রুমে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
শেষ দিনে প্রশিক্ষণের সমাপনী ও সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি। সমাপনী অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুইডেন দূতাবাস, বাংলাদেশ এর ফার্স্ট সেক্রেটারি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডেপুটি হেড, ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন সেকশন এর নাইওকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রোম (Nayoka Martinez Bäckström)। কর্মশালার প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে ছিলেন ক্যাপসের চেয়ারম্যান এবং স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
দ্বিতীয় দিনে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন পরিচালক মির্জা শওকত আলী, দৈনিক জনকণ্ঠের চীফ রিপোর্টার কাওসার রহমান, দ্যা ডেইলি স্টার এর চীফ রিপোর্টার মো. আল-মাসুম মোল্লা, একাত্তর টেলিভিশনের রিপোর্টার মো. হাবিবুর রহমান, দৈনিক প্রথম আলো এর সিনিয়র রিপোর্টার ইফতেখার মাহমুদ, সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম এর জেনারেল সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান সম্রাট, এবং এটিএন বাংলার কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর এবং সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের নির্বাহী সভাপতি কেরামত উল্লাহ বিপ্লব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি, সাংবাদিকদের প্রস্তুত করতে এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় ক্যাপস এবং পিআইবির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নিজে জানতে হবে, এই বিষয়টি সবাইকে জানাতে হবে। মানুষকে জাগ্রত করতে হবে। পরিবেশ দূষণ রোধ করে পৃথিবীকে সুস্থ করতে হবে। দূষণের ক্ষত সারিয়ে তুলতে হবে। যেন আমরা বেঁচে থাকতে পারি।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু সম্মেলনে বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। দেশের জন্য যে বিষয়গুলো দরকার তা চিহ্নিত করে সমাধানের দিকে যেতে হবে। বিশ্বের জন্যও অবদান রাখতে হবে। আশা করি আগামীর জলবায়ু সম্মেলনে দুইদিনের এই কর্মশালা বেশ কাজে দিবে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার সুইডেন দূতাবাস, বাংলাদেশ এর ফার্স্ট সেক্রেটারি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডেপুটি হেড, ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন সেকশন এর নাইওকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রোম (Nayoka Martinez Bäckström) তিনি এই শিক্ষণীয় প্রশিক্ষণটিকে সাধুবাদ জানিয়ে বলে, এই প্রশিক্ষণটি সায়েন্টিফিক কমিউনিটি, জার্নালিস্ট, এক্টিভিস্টদের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনজনিত জ্ঞান আহরণের এবং জ্ঞানের সম্প্রসারণ এর পাশাপাশি কমিউনিকেশন এর ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কর্মশালার প্রধান সমন্বয়কারী ক্যাপসের চেয়ারম্যান এবং স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, “উন্নত শহরগুলো যারা বর্তমানে পরিবেশ বিষয়ক নীতি নির্ধারণ করছে ১০০ বছর আগে তারাই দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে ছিল। এই দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশ দূষণ গুলোর ফলাফল হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন এর প্রভাব আমরা দেখতে পাচ্ছি’।
তিনি আরো বলেন ‘বায়ু দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন একই মুদ্রার দুটো পিঠ, স্থানীয় পর্যায়ে বায়ু দূষণ সমস্যার সমাধান সহ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জলবায়ু সম্মেলনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে পারে প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া।”
পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, জলবায়ু দূষিত হওয়ার কারণে পরিবেশে যে ভয়ানক প্রভাব পড়ছে তা অতিদ্রুত রোধ করা জরুরি। এর জন্য একযোগে কাজ করার কথাও তিনি বলেন। তিনি প্রশিক্ষণে উপস্থিত সকলকে নিয়ে সফলতার সাথে কপ-২৮ কাভার করার আশা ব্যক্ত করে প্রশিক্ষণ কর্মশালাটির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সহযোগী আয়োজক হিসেবে ছিল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (সিথ্রিইআর), সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি), চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ, লিগ্যাল বি, লিগ্যাল ফোরাম বাংলাদেশ, নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (ন্যাকম), পরিবেশ উদ্যোগ, সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (এসএসিসিজেএফ) এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস।