নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী

জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ৪০ মিনিটে দেশটির জেএফ কেনেডি বিমানবন্দরে অবতরণ করে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইটটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগদানের লক্ষ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি-২০১ (সোনার তরী)-তে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রীকে বহন করা ফ্লাইটটি ঢাকা ছাড়ে ১০টা ১২ মিনিটে। বিমানবন্দরে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।

১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদরদপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে ৭৮তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রথম দিনের উচ্চপর্যারের সাধারণ আলোচনায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ২২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত নৈশভোজেও প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন।

সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), সর্বজনীন স্বাস্থ্য ও অর্থসহ বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় ও সৌজন্যমূলক বৈঠকে অংশ নেবেন।

বিশ্বনেতারা ৭৮তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য নিউইয়র্কে একত্র হবেন। আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে এবারের প্রতিপাদ্য ‘আস্থা পুনর্গঠন ও বিশ্ব সংহতির পুনরুদ্ধার: সবার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও স্থায়িত্ব ত্বরান্বিত করায় ২০৩০ এজেন্ডা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ’।

১৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের রকফেলার সেন্টারে ইউএনআইডিও ও ডেলয়েটের উদ্যোগে ‘খাদ্য ভাবনা-খাদ্য সরবরাহ চেইন উদ্ভাবনে এসডিজিকে ত্বরান্বিত করায় সহযোগিতা’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এদিন তিনি ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে ‘এসডিজি সামিট-লিডার্স’ ডায়ালগ ৪ (এসডিজি অর্জনের জন্য সমন্বিত নীতি ও পাবলিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা) শীর্ষক আরেকটি সম্মেলনেও ভাষণ দেবেন।

এদিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কের লেক্সিংটন ভেন্যুতে জাতিসংঘ মহাসচিবের বৈশ্বিক শিক্ষাবিষয়ক বিশেষ দূত ও বিশ্ব স্বাস্থ্য অর্থায়নের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দূত গর্ডন ব্রাউন এবং গ্লোবাল বিজনেস কোয়ালিশন ফর এডুকেশনের এক্সিকিউটিভ চেয়ার সারাহ ব্রাউন আয়োজিত জাতিসংঘ ২০২৩ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে দেওয়া একটি উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিগত নৈশভোজে যোগ দিতে পারেন।

১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদরদপ্তরের সিআর-১৬-এ স্পেনের প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় কাউন্সিল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সভাপতির ‘টুওয়ার্ডস এ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকেও ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

একই দিন জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সিআর-১১ এ বাংলাদেশ, অ্যান্টিগা এবং বারবুডা, ভুটান, চীন, মালয়েশিয়া, চ্যাথাম হাউজ এবং সুচনা ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়োজনে চিকিৎসা পরিষেবাভিত্তিক কমিউনিটি ক্লিনিকের একটি উচ্চ পর্যায়ের সাইড ইভেন্টেও যোগ দেবেন তিনি।

২০ সেপ্টেম্বর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে ‘টেকসই উন্নয়নে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য আন্তর্জাতিক গণঅর্থায়ন বৃদ্ধি এবং দক্ষতা নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক উন্নয়ন অর্থায়ন (এফএফডি) বিষয়ে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে একটি উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় প্রধান বক্তা হিসেবে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

একই দিনে তিনি মহাসচিবের ক্লাইমেট অ্যামবিশন সামিট, মহামারি প্রতিরোধ, প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, নারীনেত্রীদের জাতিসংঘ প্ল্যাটফর্মের বার্ষিক সভা, ক্লাইমেট অ্যামবিশন সংক্রান্ত উচ্চ পর্য়ায়ের জলবায়ু বিষয়ভিত্তিক সম্মেলনের পাশাপাশি ন্যাশনাল জুরিসডিকশনের বাইরের এলাকার সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য আইনের ওপর জাতিসংঘের কনভেনশনে যোগ দেবেন।

২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ, কানাডা, গাম্বিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সাইড ইভেন্টের পাশাপাশি ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সৃষ্ট হুমকি মোকাবিলা’ শীর্ষক ব্রেকফাস্ট সামিট এবং ইউনিভার্সাল হেলথ কভারেজ নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সভায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।