নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস পালন

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে সোমবার (৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। এটি ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।

এরপর দুপুর ১২ টায় ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. তুহিনুর রহমানের সভাপতিত্বে বিভাগ প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। বিশেষ অতিথি ছিলেন অভিনেতা, আবৃ্ত্তি শিল্পী ও স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের শিক্ষক ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, চলচ্চিত্র-গবেষক ও সমালোচক অনুপম হায়াৎ, বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুশাররাত শবনম।

সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ূন কবির। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিভাগটির প্রভাষক রাগীব রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক জনাব মুহাম্মদ কাইয়ুম, বিভাগটির অন্যান্য শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা। অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করার মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু হয়। এরপর অতিথিদের শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য সৌমিত্র শেখর বলেন, ‘শুরুতেই আমি স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং যারা দেশের স্বার্থে আত্মত্যাগ করেছেন, মূলত তাদের স্বপ্নের উত্তরাধিকারী হিসেবে আমাদের এগিয়ে যাওয়া। চলচ্চিত্র জীবনের কথা বলে, চলচ্চিত্র পর্দার মাঝে জীবনকে তুলে ধরে। চলচ্চিত্রের মিডিয়াম ও রুচি বদলেছে। নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলচ্চিত্র প্রতিনিয়ত পাল্টে যাচ্ছে। জীবনের সাথে সঙ্গতি রেখে তাকে আমরা কীভাবে প্রদর্শন করতে পারি এটাই আমাদের বর্তমানে চিন্তার বিষয়। চলচ্চিত্রকে জীবনের সাথে সম্পৃক্ত করার জন্য বেশি বেশি গবেষণা করতে হবে। ভাইরাল বিষয়গুলো আমাদের জীবনের সাথে সম্পৃক্ত কি না তা বের করতে হবে। চলচ্চিত্র শুধু প্রেক্ষাগৃহে আটকে থাকবে না কি ফেসবুক, ইউটিউব, ওটিটি প্লাটফর্মে যাবে তা নিয়েও বিশ্লেষণ করতে হবে। চলচ্চিত্র থেকে মানুষ যাতে নিজেকে মুখ ফিরিয়ে না নেয়, তাকে আরও বেশি চলচ্চিত্রমুখী করতে হবে। জীবন ও চলচ্চিত্রকে কখনো বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। এটাকে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।’

বিশিষ্ট অতিথির বক্তব্যে ভাস্কর বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র উৎসব শুধু জাতীয় না, এটিকে আন্তর্জাতিক রূপ দিতে হবে। বর্তমানে মেইন স্ক্রিন থেকে শুরু করে ব্যাক পর্যন্ত ছবি নির্মাণ চলছে। ওটিটি প্লাটফর্মে নানামুখী চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে, যা ঘরে বসেই আমরা দেখতে পাই। আমাদের এই চর্চাটা আরও বেশি ধরে রাখতে হবে। এই বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে সকলকে এই সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। আগে থেকেই ভেবে নিতে হবে কে কোন দিকে যাবে।’

অনুপম হায়াৎ বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে পরিবর্তিত হচ্ছে চলচ্চিত্র। তাই আমাদের থিওরির পাশাপাশি ব্যাবহারিক দিকে নিজেদের দক্ষ করে তুলতে হবে।’

এদিকে, বিকেল তিনটায় বিভাগটির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বরণ এবং সদ্য বিদায়ী বিভাগটির প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিদায় জানানো হয়। এসময় বিভাগের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। করেন। এরপর বিভাগটির উদ্যোগে সন্ধ্যায় ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

সন্ধ্যা সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়টির জয়ধ্বনি মঞ্চে চলচ্চিত্র নির্মাতা মুহাম্মদ কাইউম নির্মিত ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।