জাবির মাদকবাহী এ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় নিহতের ঘটনার বিচার দাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় দু’জন নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন সংলগ্ন  মুরাদ চত্ত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে চিকিৎসা কেন্দ্রের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

পরে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন। তাদের দাবিগুলো হলো- ভুক্তভোগী পরিবারের ক্ষয়ক্ষতির দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে, এ ঘটনায় সম্পৃক্ত সকলের বিচার করতে হবে এবং মেডিকেলের সকল অব্যবস্থাপনা ঠিক করতে হবে।

এসময় জাবি সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাম্বুলেন্স শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য, কিন্তু প্রায়ই দেখছি এটি ব্যবহার হয় অনেকের পণ্য পরিবহনে, পারিবারিক কাজে এবং মাদক পরিবহনে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাজনক ঘটনা। এটি হুট করে হয়নি। প্রশাসনের অবহেলার কারণেই হয়েছে। ক্যাম্পাসে মাদক আনতে গিয়ে এক রিক্সাচালক নিহত হয়। সে মাদক নিয়ে একটি হলে উল্লাসও হয়। প্রশাসন এ হত্যার ঘটনাকে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিল। আমরা স্পষ্টত বলে দিতে চাই নিহত রিক্সাচালকের পরিবারের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলের শাস্তি দিতে হবে।’

ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনৌজ কান্তি রায় বলেন, ‘ক্যাম্পাসে অছাত্ররা এ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে মাদক আনতে পারে কিন্তু ছাত্ররা এ্যাম্বুলেন্স পায়না। জানা যায় সেদিন চালক মাদক নিয়ে আসার সময় আতংকে গাড়ি চালিয়েছে, মদের বোতল ভেঙে যাওয়ায় তাকে আধা ঘন্টা পানিতে চুবিয়ে রাখা হয়েছে। এত জঘন্যতা আর কত দেখব। আমাদের দাবি হচ্ছে রিক্সাচালকের পরিবারের দায়িত্ব প্রশাসনকে নিতে হবে। আহত পরিবারের সমস্ত ব্যয়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা কর্মীদের বিচার করতে হবে। তারা পুলিশকে অসহযোগিতা করেছে ঘটনা তদন্তে।’

গত ২৬ জানুয়ারি রাতে এ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা থেকে জাবি ক্যাম্পাসে মাদক নিয়ে যাচ্ছিল। পথে সাভারের বিপিএটিসি এলাকায় এ্যাম্বুলেন্সটি একটি রিক্সাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রিক্সাচালক মারা যান। সে সময় রিক্সায় একই পরিবারের চারজন সদস্য ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী। তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে সাভারের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা নারীর আঘাত গুরুতর হওয়ায় গর্ভের সন্তানটি দু’দিন পর মারা যায়। শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়াতে তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।