জাবি’র এ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় নিহতদের ক্ষতিপূরণের দাবি

মাদক পরিবহনের সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় নিহত ও আহতের ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্য ও প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুর দু’টায় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের পাদদেশে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময়  বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার নেতৃবৃন্দ সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন।

মানববন্ধনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কনৌজ কান্তি রায় বলেন, ‘একটি আবাসিক হলের অনুষ্ঠানে ফূর্তি করার জন্য মাদক আনার সময় একজন রিক্সাচালক ও এক নারীর গর্ভের সন্তান এ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় মারা যায়। এ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ তিনদিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে রিপোর্ট দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এতদিনেও কোনও রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। ভিসি বরাবর একটি আবেদন জমা দেওয়া হলে তিনি সমাবর্তনের দোহায় দিয়ে পাশ কাটিয়ে যান বিষয়টি। কমিটি মওলানা  ভাসানী হলের ক্ষমতাসীন  রাজনৈতিক দলের দু’জন সদস্য ও এ্যাম্বুলেন্সের চালককে নিয়ে লোক দেখানো একটি তদন্ত করেছে। আমরা চাই অনতিবিলম্বে নিহত ও আহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক ও এবং হত্যাকারীদের যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ইমতিয়াজ অর্ণব বলেন, ‘পৃথিবীতে আসার আগেই গর্ভের যে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে তার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। এরকম একটি নিন্দনীয় ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান যদি বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত সময়ের মধ্যে না করে তাহলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক হয়ে বড়সড় আন্দোলন শুরু করব।’

নিহতের একজনের পরিবারের সদস্য ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘আমার বোনের চিকিৎসা বাবদ যে খরচ হয়েছে তা আমাদের সামর্থ্যের বাইরে। বোনকে অপারেশনের জন্য এখনো দুই লক্ষ টাকা প্রয়োজন। এত টাকা জোগাড় করা এই মুহূর্তে আমার পরিবারের পক্ষে অসম্ভব। টাকার অভাবে আমরা অপারেশন করতে পারছি না। কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের একটাই দাবি আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’

গত ২৬ জানুয়ারি রাতে সাভারের বিপিএটিসি এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাম্বুলেন্স একটি রিক্সাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। ওই দুর্ঘটনায় রিক্সাচালক ঘটনাস্থলেই মারা যায়। সে রিক্সায় একই পরিবারের চারজন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে সাভারের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা নারী গুরুতর আহত হওয়ায় গর্ভের সন্তানটি দু’দিন পর মারা যায়। ওই এ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা থেকে মাদক নিয়ে ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনা ঘটে।