জনগণই আওয়ামী লীগের প্রভু: শেখ হাসিনা

ভোট চুরি করলে দেশের মানুষ মেনে নেয় না বলেই খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জনগণই ভোটের মালিক। আওয়ামী লীগের আলাদা কোনও প্রভু নেই, জনগণই আওয়ামী লীগের প্রভু। নির্বাচনের বিষয়ে জনগণের প্রতিই আওয়ামী লীগ দায়বদ্ধ।

রোববার (৬ আগস্ট) গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতির প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ১৪ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের সম্মানের বাংলাদেশ। আমরা যখন স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছি তখন জাতিসংঘ আমাদের উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘ পরিকল্পনার কাজ করার ফলে আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে মর্যাদা পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের ইতিহাসে একমাত্র আওয়ামী লীগই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। দেশের গ্যাস বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। বিএনপির হাতে দেশ ও দেশের মানুষ নিরাপদ নয়। জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান- সবাই খুনি।

জনগণকে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কি চায় উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে চলুক? বাংলাদেশের জনগণকে প্রশ্ন করবেন, কারণ জনগণ হচ্ছে ভোটের মালিক। তারা যদি চায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাবে, প্রতিষ্ঠিত হবে। তাহলে নৌকা মার্কা আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে হবে। আওয়ামী লীগ ভোট পেলেই এটা সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনাস্থা সৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। যা বাংলাদেশে ‘ওয়ান ইলেভেন’ নামে পরিচিত। রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেদিন বিকেলে জরুরি অবস্থা জারির পর বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়।

আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ওয়ান-ইলেভেন প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কারণেই ওয়ান ইলেভেন হয়েছিল। খালেদা জিয়া ভোটচোর হিসেবে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যতার হার ৪১ ভাগ ছিল, সেখান থেকে আমরা কমিয়ে ১৮ -তে নিয়ে এসেছি। একটি পত্রিকায় অর্থনীতিবিদের আর্টিকেল পড়লাম। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার কমেছে নাকি কমেছে শুধু দুটি ক্ষুদ্র ঋণের প্রতিষ্ঠানের কারণে। সে ভদ্রলোকের নাম আমি বলবো না, আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই যে, যদি এনজিওদের ক্ষুদ্র ঋণে দারিদ্র্য বিমোচন হয়ে থাকে তাহলে বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন আগে হলো না কেন?

এসময় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জানান, ২০০১ সালের নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের কারণে আওয়ামী লীগ হেরেছে। তিনি বলেন, গ্যাস বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় এবং দেশি-বিদেশি নানা চক্রান্তের কারণে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেনি আওয়ামী লীগ।