গাজার দক্ষিণাঞ্চলের একটি ‘মানবিক অঞ্চলে’ ইসরায়েলের নতুন হামলার ঘটনায় আরও ৪০ জন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
একটি মানবাধিকার সংস্থা হামলায় ফিলিস্তিনিদের নিহতের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে। ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর জানায়, মধ্যরাতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান তিনটি মার্কিনীদের তৈরি ৯০০ কেজি ওজনের এমকে-৮৪ বোমা ফেলে। এমন সময় এসব বোমা ফেলা হয়, যখন বেসামরিক লোকেরা ঘুমাচ্ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, খান ইউনিস শহরের পশ্চিমে ‘মানবিক অঞ্চল’ ঘোষিত আল-মাওয়াসিতে বাস্তুচ্যুতদের আবাসস্থল (তাঁবু) লক্ষ্য করে তিনটি হামলা চালানো হয়। হামলার স্থলে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
হামাসের সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অপারেশন) বলেছেন, হামলায় ৪০ জন নিহত ও ৬০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। অনেকে এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে বলেছেন, মধ্য রাতের পরপরই আল-মাওয়াসি এলাকায় বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুনের শিখা আকাশে উঠতে দেখা যায়।
ঘটনাস্থলের কাছাকাছি বসবাসকারী একটি দাতব্য সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক খালেদ মাহমুদ বলেন, তিনি এবং অন্য স্বেচ্ছাসেবীরা সাহায্যের জন্য ছুটে এসেছিলেন; কিন্তু ধ্বংসের ভয়াবহতা দেখে স্তব্ধ হয়ে যান। হামলায় ৭ মিটার গভীর তিনটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং ২০টিরও বেশি তাঁবু চাপা পড়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, হামাসের সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি সম্ভব। এই সুযোগ সীমিত হয়ে আসছে। তবে যুদ্ধ পুরোপুরি শেষ করার বিষয়টি অনেক জটিল। সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, হামাসের সঙ্গে অন্তত ছয় সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি সম্ভব, যা দেশের উত্তরের লেবানন সীমান্তেও কিছুটা স্থিতিশীলতা আনতে পারে।
অন্যদিকে, লেবাননের ইরানপন্থি হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ও ইসরায়েলের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ হলে ‘অপ্রত্যাশিত ও ভয়াবহ পরিণতি’ ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছেন এক শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা। সোমবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত মধ্যপ্রাচ্য-আমেরিকা সংলাপ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এ খবর জানিয়েছে। তবে প্রতিবেদনে ওই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করা হয়নি।