অবশেষে কাতারের মধ্যস্থতায় চারদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল সরকার। চুক্তি অনুযায়ী ৫০ জন জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে বন্দী ১৫০ ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন; যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
বুধবার (২২ নভেম্বর) ভোরে দেশটির মন্ত্রিসভা এক অভূতপূর্ব ভোটের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল। খবরে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ জনের একটি করে দল মুক্তি পাবে। তবে চুক্তির বিস্তারিত কোনও তথ্য জানানো হয়নি।
নিয়মানুসারে, ইসরায়েলের এ চুক্তি অনুমোদন করতে হলে শুরুতে এটি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার অনুমোদন করতে হবে। এরপর দেশটির পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন নিতে হবে। এসব প্রক্রিয়ার দ্রুততার জন্য টেলিফোনেও আয়োজন করার সুযোগ রয়েছে। মন্ত্রিসভায় এসব প্রক্রিয়া অনুমোদন পেলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশটির নাগরিকরা আদালতে আপিল করতে পারবেন।
এর আগে, মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাতে টাইমস ইসরায়েল দেশটির এক সিনিয়র কর্মকর্তার বরাতে জানায়, আগামী চারদিনের মধ্যে ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। দৈনিক এক ডজন করে জিম্মি মুক্তি পাবেন।
চুক্তি অনুযায়ী, এসব জিম্মিকে কয়েক ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে। প্রতি ১০ জন জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ৩০ জিম্মির মুক্তির শর্তারোপ করা হয়েছে। এছাড়া চুক্তিতে স্থলভাগে চার থেকে পাঁচ দিন সম্পূর্ণভাবে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে।
ইসরায়েল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এরই মধ্যে একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতি দিয়েছে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসও।
বিবৃতিতে হামাস বলেছে, যুদ্ধ বিরতির সময় ইসরায়েল গাজায় কারও ওপর আক্রমণ বা গ্রেফতার করবে না। সেই সাথে চারদিনের এই বিরতির সময় দক্ষিণ গাজায় বিমান চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। আর উত্তর গাজায় প্রতিদিন ছয় ঘণ্টার জন্য বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়াও সালাহ আল-দ্বীন স্ট্রিটে মানুষের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা হবে বলেও জানানো হয়।
এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী গাজায় খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তার পাশাপাশি ১০০ থেকে ৩০০ ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। আগামী বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বা শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত বোমা হামলা চালায় হামাস। এতে ইসরাইলের ১২০০ মানুষ নিহত হয়। এছাড়াও দেশটির ২৪০ বাসিন্দাকে বন্দি করে নিয়ে যায় স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি।
অন্যদিকে, হামাসের এ হামলার জবাবে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে অনবরত বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইসরাইলি বোমা হামলায় গাজায় ১৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি শিশু। আর নারীর সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে।