গত নভেম্বরে দুই বছরের সংঘাত অবসানের পর ইথিওপিয়ার উত্তর টাইগ্রে অঞ্চলে ক্ষুধার কারণে ১৩২৯ জন মৃত্যুবরণ করেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এবং আঞ্চলিক রাজধানী মেকেলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ক্ষুধা এখন টাইগ্রেতে মৃত্যুর প্রধান কারণ।
গবেষকদের তদন্ত অনুযায়ী এমন মৃত্যুর পরিমাণ প্রায় ৬৮% এরও বেশি।
আগস্টের ১৫-২৯ তারিখ পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত একটি পারিবারিক আদমশুমারির উপর ভিত্তি করে টাইগ্রের নয়টি উপজেলা এবং অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকদের ৫৩টি ক্যাম্পে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। টাইগ্রেতে মোট ৮৮টি উপজেলা এবং ৬৪৩টি বাস্তুচ্যুত শিবির রয়েছে।
ক্ষুধায় মৃত্যুর সংখ্যা আধিক্যের একটি কারণ হলো টাইগ্রেতে মানবিক সহায়তার শস্য চুরি করার একটি পরিকল্পনা মার্চ মাসে উদঘাটনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তা স্থগিত করা।
দেশব্যাপী চুরির ঘটনা ধরা পড়ার পর জুন মাসে ইথিওপিয়ার বাকি অংশে সহায়তা বিরতি বাড়ানো হয়েছিল। ইথিওপিয়ার সরকার স্থগিতাদেশের অবসান চায়। কিন্তু মার্কিন সরকার এবং জাতিসংঘ চায় খাদ্য সহায়তা বিতরণ ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে।
টাইগ্রে অঞ্চলে গবেষকদের সমীক্ষায় মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিগুণ হারে বেড়েছে সাহায্য স্থগিত করার পরে।
মার্চ মাসে এই সংখ্যা ১৫৯ থেকে জুলাই মাসে ৩০৫ এ পৌঁছায়।
টাইগ্রের ৬ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় ৫.৪ মিলিয়ন মানবিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। সামগ্রিকভাবে ইথিওপিয়ার ২০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। ইথিওপিয়ান এবং মিত্রবাহিনীর সাথে টাইগ্রে যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে ক্ষুধা জর্জরিত টাইগ্রে।
ফেডারেল সরকার এই অঞ্চলের পরিষেবাগুলোকে হ্রাস করে সহায়তাসমূহকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ক্ষুধাকে এখানে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ করছেন।
নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি আশা জাগিয়েছিল যে সাহায্য এই অঞ্চলে পৌঁছাবে। কিন্তু তারা ব্যাপক চুরির ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিছু মার্কিন চিহ্নিত শস্যের ব্যাগ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়েছিল।
টাইগ্রে কর্তৃপক্ষ দেখেছে ৭০০০ মেট্রিক টন শস্য চুরি হয়েছে। এই ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগে ৪৮০ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।