২০১৯ সালে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে সবকিছু যেন থমকে যায়। জীবন বাঁচানোটাই যেখানে মূখ্য হয়ে দাঁড়ায়, সেখানে খেলাধুলাও হয়ে উঠে গৌণ। যার ফলে একটি বড় সময় ধরে বন্ধ ছিলো ইতালির ফুটবল কার্যক্রম। কেননা বৈশ্বিক এই মহামারিতে ইউরোপে সবার আগে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইতালি। দেশটিতে বয়জৈষ্ঠদের সংখ্যার হার বেশি হওয়ায়, একসময় করোনায় মৃত্যুর হিসেবে শীর্ষ দেশ ছিল ইতালি। তবে ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হলেও এই মহামারীর সময়ের সে ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি দেশটি।
সংক্রমণ ও মৃত্যু কিছুটা কমলে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠে ফুটবল ফিরলেও অর্থনৈতিক লোকসান কাটিয়ে ওঠা কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি। ২০১৯ থেকে ২০২২- মহামারির এ সময়ে ইতালির পেশাদার ফুটবল ক্লাবগুলোর লোকসানের পরিমাণ দেখলে চোখ কপালে উঠার দশা হবে। সম্প্রতি ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা ‘রিপোর্টক্যালসিও’ নামে পরিচিত। সেখানে বলা হয়েছে, করোনাকালীন ৩৬০ কোটি ইউরো ক্ষতির মুখে পড়েছে ইতালির ক্লাবগুলো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪৩ হাজার ২৭৮ কোটি টাকার বেশি। এক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারীতে ইতালির ঘরোয়া ফুটবলের শীর্ষ তিন স্তরের (সিরি ‘আ’, সিরি ‘বি’ও সিরি ‘সি’) ক্লাবগুলো বছরে গড়ে ১২০ কোটি ইউরো করে হারিয়েছে। শুধু ২০২১-২২ মৌসুমেই ক্ষতি হয়েছে ১৪০ কোটি ইউরো। যা গত ১৫ বছরের মধ্যে দেশটির ফুটবলে সবচেয়ে বড় লোকসান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাতে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের ঋণ বেড়ে দাড়ায় ৫৬০ কোটি ইউরোয়। ততদিনে করোনার টিকা আবিষ্কার হলেও স্টেডিয়ামে দর্শকদের প্রবেশের সুযোগ ছিলো না। দলগুলো খেলেছে গ্যালারি ফাঁকা রেখে। তবে পরের মৌসুমে মাঠে দর্শকদের আগমন হওয়ায় লোকসানের পরিমাণ কিছুটা কমে দাড়ায়।
সঠিক পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইতালিয়ান ফুটবলের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী এফআইজিসি। দেশটির ফেডারেশনের কর্মকর্তারা মনে করেন, বেশ কঠিন হলেও এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠা সম্ভব। ২০৩২ সালে তুরস্কের সঙ্গে যৌথভাবে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করতে চায় দেশটি। আর সেটিকে ‘অনন্য সুযোগ’ হিসেবে দেখছে ইতালির ফুটবল ফেডারেশন। এরই মধ্যে সে লক্ষ্য নিজেদের অবকাঠামো ও স্টেডিয়াম সংস্কারের কাজও শুরু করেছে দিয়েছে ইউরোপের দেশটি।